কর ছাড় চায় রবি আজিয়াটা
- আপডেট সময় : ০৪:২৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর ২০২০ ১৯০ বার পড়া হয়েছে
১০ নভেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্ট
কর ছাড়ের সুবিধা চায় দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়সহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু এখনো কোনো সুখবর মিলছে না। কর ছাড় পেলে কোম্পানিটির আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য বরির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী ১৭ নভেম্বর কোম্পানির আইপিও আবেদন শুরু হবে। বাজার আসার প্রক্রিয়ার মধ্যেই রবি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে কর ছাড় ছাড়াও কিছু প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম জানান, কর ছাড়ের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো সুখবর পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, রবি দেশের বৃহৎ মোবাইল ফোন অপারেটর। কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। কর ছাড় পেলে রবির বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে রবি কর ছাড়ের আবেদন করে। সেখানে রবি উল্লেখ করেছে যে, কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর পুঁজিবাজার মূলধনে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে রবি। এমতাবস্থায় প্রণোদনা হিসেবে করপোরেট কর ১০ শতাংশ কমানোর দাবি জানায় প্রতিষ্ঠানটি। কর ছাড় দিলে দেশের অন্য কোম্পানিগুলো আইপিওর মাধ্যমে বাজারে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে টার্নওভার কর ২ শতাংশ ছাড় চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ সম্পর্কে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হলে ৪০ শতাংশ এবং অতালিকাভুক্ত হলে ৪৫ শতাংশ কর দিতে হয়। এছাড়া টার্নওভারের ওপর ২ শতাংশ হারে কর দিতে হয় মোবাইল ফোন অপাররেটদের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের ব্যবসা করছে এমন বৃহৎ ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিকে উৎসাহিত করার জন্য কিছুটা কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়া উচিত। তাতে এসব কোম্পানি বাজারে আসতে উৎসাহিত হবে। যার মাধ্যমে বাজার মূলধন বাড়বে। একই সঙ্গে লেনদেন গতিশীল হবে এবং বাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া কোনো কোম্পানির কর কমানো হলে এর ইতিবাচক প্রভাব মুনাফায় পড়ে। তাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
অর্থনীতিবিদ ড. এ. বি. মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকার যে কর নির্ধারণ করেছে তা সব মোবাইল অপাটেরদের জন্য প্রযোজ্য। এখন রবি কে কর ছাড় দিলে অন্য অপারেটদেরও সেই সুবিধা দিতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু রবি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে কর ছাড় পেলে কোম্পানির মুনাফায় তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে শেয়ারহোল্ডাররা ভালো লভ্যাংশের মাধ্যমে সুবিধা পাবেন।
এ সম্পর্কে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, দেশি-বিদেশি ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে কিছু প্রণোদনা দিলে বাজারে তালিকাভুক্ত হতে তারা উৎসাহিত হবে। রবি দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মোবাইল অপারেটর। প্রতিষ্ঠানটি বাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। তারা কর ছাড় পেলে মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে রবি আজিয়াটা লিমিটেড ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার পুঁজিবাজারে ছেড়ে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করবে। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ রবি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিওর ব্যয় নির্বাহ করতে খরচ করবে। কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শেয়ার ছেড়ে দেশের পুঁজিবাজারে এক ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া রবির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৪ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ পয়সা। আলোচ্য সময়ের জন্য কোনো সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করেনি রবি। গত পাঁচ হিসাব বছরের রবির ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৩ পয়সা।