জুরাইনের ফ্ল্যাট বাসায় জাল টাকা ও রুপির কারখানা
- আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭৬ বার পড়া হয়েছে
১৮ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
থার্টিফার্স্ট এবং ইংরেজি নতুন বছরকে সামনে রেখে দেশীয় টাকা এবং ভারতীয় জাল রুপি তৈরি করছে চিহ্নিত একটি প্রতারক চক্র। তারা জুরাইনের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে টাকা ও জাল রুপি তৈরির কাজ গোপন করে আসছিল। তবে গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পেরে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই বাসায় অভিযান পরিচালনা করে নয় জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে জাল টাকা তৈরির হোতা জাকির হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, ‘গোপন সংবাদে জুরাইন এলাকার শহীদ শাহাদাত হোসেন রোডের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আসল ৫ লাখ ৫ হাজার টাকার সঙ্গে ২০ লাখ জাল রুপি ৩২ লাখ দেশিয় জাল টাকা উদ্ধার করা হয়।
এসময় জাল ট্রফি ও টাকার পাইকারি-খুচরা সরবরাহকারী নারী পুরুষ মিলে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।’
অভিযানে থাকা এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এ সময় বাসা থেকে জাল টাকা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। যা দিয়ে কোটি টাকার ওপরে টাকা বা রুপি তৈরি করা যেত। গ্রেফতারকৃতরা হলো জাকির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম বাদল খান, মালেক ফরাজী, জসিম উদ্দিন, শিহাব ও আব্দুর রব।
এই চক্রের হোতা জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী। ২০১৯ সালে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তারা জাল রুপি তৈরির অভিযোগে গ্রেফতার হয়। তখন তারা ডেমরা এলাকার একটি আধুনিক বাসা ভাড়া করে জাল রুপি তৈরি করে আসছিল। জাকির চিহ্নিত একজন জাল টাকা কারবারি। সে টাকা তৈরি, নকশা করতে বেশ পারদর্শী। হাতুড়ে ইঞ্জিনিয়ার এবং জাল টাকা সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা রাখে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১০ থেকে ১২ টি মামলা রয়েছে। এ ব্যবসা নির্বিঘ্নে করার জন্য সে তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে করে। তার স্ত্রী প্রতারক নারী চক্র নিয়ন্ত্রণ করে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য আছে। আর জসিম ও ওবায়দুল টাকা তৈরির কারখানায় বিশেষ কাগজ, নিরাপত্তা সুতা এবং অন্য সব কাজ করতে বেশ পারদর্শী। জাকিরের কাছ থেকে হাতে খড়ি বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
বাদল সাভার ও মানিকগঞ্জে পাইকারি ডিলার। শিহাব রাজধানীর পাইকারি ডিলার। সাগর নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে জাল টাকা ও রুপির ডিলার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া তাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে বরিশাল কেন্দ্রিক নেটওয়ার্ক রয়েছে। যে নেটওয়ার্কের অন্যতম হোতা গ্রেপ্তারকৃত জাকির তার সঙ্গে বরিশালের আরেক জাল টাকার কারবারি জামালের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যাকে গ্রেপ্তারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আর কয়েকদিন পর থার্টি ফাস্ট নাইট, ইংরেজি নতুন বছর। সাধারণত এই সময় টাকা- লেনদেন বেড়ে যায়। আর এই সুযোগটি নেয় প্রতারক চক্র। গ্রেপ্তারকৃতরা এসব উৎসবকে সামনে রেখে টাকা ও জাল রুপি তৈরি করছিল। তাদের রিমান্ডে নিয়ে চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।