ঢাকা ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় এক নারীর দুই স্বামী, একজনকে নিয়ে পলায়নকালে তুলকালাম

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১১:০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫০ বার পড়া হয়েছে

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

কুমিল্লার দেবীদ্বারের পালিয়ে যাওয়া প্রমিক যুগলকে উদ্ধার করতে গিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। দেবীদ্বারের প্রেমিক যুগলকে পুলিশ বুড়িচং উপজেলা থেকে উদ্ধার করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে প্রেমিক অচেতন হয়ে পড়লে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তিন পুলিশকে গণপিটুনি দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বুড়িচং থানা, দেবীদ্বার থানা, ক্যান্টম্যান্ট হাইওয়ে ও দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির বিপুল সংখ্যক পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক তিন পুলিশ ও প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানায় নিয়ে আসে।

ওই ঘটনায় দেবীদ্বার থানায় প্রেমিক ইউছুফসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে প্রেমিকা আখি আক্তারের মা নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় আজ একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাতে ওই প্রেমিক যুগল পালিয়ে যায়। পরে প্রেমিকার মা মামলা করলে পুলিশ প্রেমিক ইউসুফের বড় ভাই ইব্রাহীমকে আটক করে। পুলিশ ইব্রাহীমকে ছাড়িয়ে নিতে পলাতক যুগলকে থানায় আসতে বলেন। ইউসুফ থানায় আসার পথে বুড়িচং উপজেলার পোস্ট অফিস রাম্পুর এলাকায় তাদের আটক করতে আসা দেবীদ্বার থানার তিন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রেমিক ইউসুফ অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা ওই তিন পুলিশ সদস্যকে আটকে রেখে গণপিটুনি দেয়। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বুড়িচং থানা, দেবীদ্বার থানা, ক্যান্টম্যান্ট হাইওয়ে ও দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ি পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক তিন পুলিশ ও প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানায় নিয়ে যায়।

বিহারমন্ডল গ্রামের আব্দুল গফুর জানান, প্রতিবেশী আখির সঙ্গে ইউছুফের দুই বছরের প্রেমের পর গতমাসে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। পারিবারিকভাবে মেনে নেওয়ার আশ্বাসে তাদের ফিরিয়ে এনে আখিকে ২৩ ডিসেম্বর অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়। নতুন স্বামীকে নিয়ে বাবারবাড়ি বেড়াতে এসে আখি ইউসুফের সঙ্গে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধার করতে যাওয়া দেবীদ্বার থানার এএসআই ইকরামুল হক জানান, ঘটনাস্থলে দুটি গ্রুপ সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। আহত ইউছুফ জানিয়েছে আমার লাথিতে নয়, তার মৃগী রোগ থাকায় সে অচেতন হয়ে পড়েছিল।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, আমাদের অবহিত না করে আমাদের থানা থেকে আসামি ধরতে আসা হয়। যেহেতু অভিযোগটি দেবীদ্বার থানার সেহেতু ওই থানায় মামলা হতে বাঁধা নেই।

ব্রাক্ষণপাড়া-দেবীদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ জানান, কিছু পুলিশ মানুষের সাথে আচরণের শিক্ষাটাও নেননি। তাদের কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করার অপরাধে দেবীদ্বার থানার এএসআই ইকরামুল হকসহ তিন পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

কুমিল্লায় এক নারীর দুই স্বামী, একজনকে নিয়ে পলায়নকালে তুলকালাম

আপডেট সময় : ১১:০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

কুমিল্লার দেবীদ্বারের পালিয়ে যাওয়া প্রমিক যুগলকে উদ্ধার করতে গিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। দেবীদ্বারের প্রেমিক যুগলকে পুলিশ বুড়িচং উপজেলা থেকে উদ্ধার করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে প্রেমিক অচেতন হয়ে পড়লে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তিন পুলিশকে গণপিটুনি দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বুড়িচং থানা, দেবীদ্বার থানা, ক্যান্টম্যান্ট হাইওয়ে ও দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির বিপুল সংখ্যক পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক তিন পুলিশ ও প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানায় নিয়ে আসে।

ওই ঘটনায় দেবীদ্বার থানায় প্রেমিক ইউছুফসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে প্রেমিকা আখি আক্তারের মা নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় আজ একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাতে ওই প্রেমিক যুগল পালিয়ে যায়। পরে প্রেমিকার মা মামলা করলে পুলিশ প্রেমিক ইউসুফের বড় ভাই ইব্রাহীমকে আটক করে। পুলিশ ইব্রাহীমকে ছাড়িয়ে নিতে পলাতক যুগলকে থানায় আসতে বলেন। ইউসুফ থানায় আসার পথে বুড়িচং উপজেলার পোস্ট অফিস রাম্পুর এলাকায় তাদের আটক করতে আসা দেবীদ্বার থানার তিন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রেমিক ইউসুফ অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা ওই তিন পুলিশ সদস্যকে আটকে রেখে গণপিটুনি দেয়। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বুড়িচং থানা, দেবীদ্বার থানা, ক্যান্টম্যান্ট হাইওয়ে ও দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ি পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক তিন পুলিশ ও প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানায় নিয়ে যায়।

বিহারমন্ডল গ্রামের আব্দুল গফুর জানান, প্রতিবেশী আখির সঙ্গে ইউছুফের দুই বছরের প্রেমের পর গতমাসে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। পারিবারিকভাবে মেনে নেওয়ার আশ্বাসে তাদের ফিরিয়ে এনে আখিকে ২৩ ডিসেম্বর অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়। নতুন স্বামীকে নিয়ে বাবারবাড়ি বেড়াতে এসে আখি ইউসুফের সঙ্গে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধার করতে যাওয়া দেবীদ্বার থানার এএসআই ইকরামুল হক জানান, ঘটনাস্থলে দুটি গ্রুপ সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। আহত ইউছুফ জানিয়েছে আমার লাথিতে নয়, তার মৃগী রোগ থাকায় সে অচেতন হয়ে পড়েছিল।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, আমাদের অবহিত না করে আমাদের থানা থেকে আসামি ধরতে আসা হয়। যেহেতু অভিযোগটি দেবীদ্বার থানার সেহেতু ওই থানায় মামলা হতে বাঁধা নেই।

ব্রাক্ষণপাড়া-দেবীদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ জানান, কিছু পুলিশ মানুষের সাথে আচরণের শিক্ষাটাও নেননি। তাদের কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করার অপরাধে দেবীদ্বার থানার এএসআই ইকরামুল হকসহ তিন পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।