দায়িত্ব নিয়েই খাল উদ্ধারে ডিএসসিসি
- আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ জানুয়ারী ২০২১ ১৮০ বার পড়া হয়েছে
০২ জানুয়ারী ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের প্রথমদিনে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পাঁচটি ড্রেনেজ পিট হতে ৭৪ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। শনিবার ( ২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক থেকে পান্থপথ বক্স কালভার্ট হতে বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে পানি প্রবাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুপুরে এই বক্স কালভার্ট হতে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে যান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এবং প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন। পরে এই দুই কর্মকর্তা বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম নিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, আপনারা জানেন গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা ওয়াসা হতে সকল খাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিএসসিসির মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাল বিলম্ব না করে আজ (শনিবার) থেকে কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা পান্থপথ কালভার্ট হতে বর্জ্য অপসারণ কাজ শুরু করেছি।
এরপর আমরা সেগুনবাগিচা কালভার্ট হতে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করব। পাশাপাশি আমাদের জিরানী, মান্ডা ও শ্যামপুর খালে প্রাথমিক পরিচ্ছন্নতা কাজ চলছে। তারপর সীমানা নির্ধারণ ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করব।
শুরু হওয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে এই কালভার্টের অভ্যন্তরে কি আছে তা দেখার পর পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে জানিয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমরা মার্চের মধ্যে এ দুটি বক্স কালভার্ট ও তিনটি খাল হতে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শেষ করতে চাই। যাতে করে আমরা এপ্রিলের শুরু হতে ঢাকা শহর থেকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে পারি। সে পরিকল্পনা নিয়েই আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, মার্চের মধ্যে আমরা তিনটি খাল এবং দুটো কালভার্ট পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার করতে পারব। যদি আমরা এ সময়ের মধ্যে খাল এবং কালভার্ট পরিষ্কার করতে পারি, তাহলে আমরা বিশ্বাস করি, এ বছর আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাব।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, আমরা আজ থেকে যে কাজ শুরু করেছি, তা শুধু কর্পোরেশনের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে। আমাদের কিছু সক্ষমতা রয়েছে, তারপরও দীর্ঘদিন ধরে যেহেতু এই কাজগুলো ওয়াসার হাতে ছিল তাই আমরা ওয়াসার কারিগরি সহযোগিতা নেবো। ওয়াসার সাথে আমাদের যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, সে মোতাবেক আমরা শুরুতে ওয়াসার কারিগরি সহযোগিতা, যন্ত্রপাতি ও জনবল সহযোগিতা নেবো। ওরা দু’বছর আমাদের সাথে কাজ করবে, পর্যায়ক্রমে আমরা সক্ষমতা অর্জন করব।
এ সময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বলে জানান।
প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে জানান, পান্থকুঞ্জ পার্কের ভেতরে যে বক্স কালভার্ট রয়েছে সেটির গভীরতা দুই রকম আছে। কোথাও ১১ ফিট আবার কোথাও ২০-২২ ফিট আছে। আমরা কারিগরি কমিটির সহযোগিতায় সঠিক মাপটা বের করব।
কেবল মুখ (ড্রেনেজ পিট)পরিষ্কার করাটা বক্স কালভার্টের অভ্যন্তরে পানিপ্রবাহ সৃষ্টিতে কতটা ফলপ্রসূ হবে, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বদরুল আমিন বলেন, শুধু কালভার্টের (ড্রেনেজ পিট) পরিষ্কার করলে হবে না। ভেতরে লোক প্রবেশ করাতে হবে। মেশিন প্রবেশ করাতে হবে। ক্রেন প্রবেশ করাতে হবে। প্রেসার দিয়ে পানি দিতে হবে। সাকার মেশিন ব্যবহার করতে হবে। সাকশন করে উঠাতে হবে। আমরা দেখলাম, কাল কালভার্টের ভেতরের কানেকশন মুখগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, সে মুখগুলো ছোটাতে হবে। আমরা ২০০ মিটার করে আগাবো। পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে।
কালভার্টের উপর কোনো অবৈধ স্থাপনা নেই জানিয়ে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলেন, কালভার্টের উপর কোনো অবৈধ স্থাপনা নাই। সীমানা নির্ধারণ পূর্বক বুঝা যাবে কালভার্টের বাইরে কোনো অবৈধ স্থাপনা আছে কিনা। কালভার্টের ভেতর কোনো স্থাপনা নেই।
পান্থপথ বক্স কালভার্টে মোট ২৪টি মুখ (ড্রেনেজ পিট) রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিনে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সময়ে পাঁচটি ড্রেনেজ পিট হতে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ সময় পাঁচটি ড্রেনেজ পিট হতে ছয় ট্রিপে প্রায় ৭৪ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। আগামীকাল দিনের বেলা (সকাল নয়টা হতে) পান্থকুঞ্জ পার্কের অভ্যন্তরে এবং রাতের বেলায় কাঠালবাগান ঢাল হতে পান্থপথ মোড় পর্যন্ত পিটগুলোর মধ্যবর্তী অংশে ড্রেজারের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাবলা ও ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ উপস্থিত ছিলেন।