ঢাকা ০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসমাইল হানিয়ের হুঙ্কার- আগুন নিয়ে খেলবেন না

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১২:৩৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মে ২০২১ ১৭২ বার পড়া হয়েছে

১৬ মে ২০২১,আজকের মেঘনা ডটকম , ডেস্ক রিপোর্ট :

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে। নেতানিয়াহুকে তিনি বলেছেন- আগুন নিয়ে খেলবেন না। এই যুদ্ধের নাম হলো জেরুজালেম। ওদিকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে লড়াই অব্যাহত আছে। আজ রোববারও সেখানে মুহুর্মুহু বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইয়াহিয়া আল সিনওয়ারের বাড়ি টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে তারা। হামাস পরিচালিত টেলিভিশন স্টেশন থেকে এ কথা বলা হয়েছে। আরেক হামলায় গাজায় একজন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছেন।

আহত হয়েছেন তার স্ত্রী ও কন্যা। গত সোমবার শুরু হওয়া এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ৪১টি শিশুসহ কমপক্ষে ১৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন গাজায়। পক্ষান্তরে ইসরাইলে নিহত হয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সপ্তম দিনের মধ্যে উভয় পক্ষে চলছে এই লড়াই। ওদিকে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরে দূতরা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। আজ রোববার দিনের শেষে বিশেষ বৈঠকে বসার কথা রয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের।

এখন পর্যন্ত ইসরাইলের হামলার প্রতিশোধ নিতে হামাস শুধু রকেট ছুড়েছে। তার জবাবে সর্বাত্মক যুদ্ধের অংশ হিসেবে গাজায় ধ্বংসলীলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা একের পর এক আকাশচুম্বী ভবনকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে বোমা হামলা করে। শনিবার তারা আল জালা নামের একটি ১২ তলাবিশিষ্ট ভবন মুহূর্তেই মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। এই ভবনে আল জাজিরা, বার্তা সংস্থা এপি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ার অফিস বা ব্যুরো ছিল। এ হামলার জবাবে হামাস রকেট ছুড়েছে। ইসরাইলের দাবি আল জালা ভবনটি তাদের সেনাদের টার্গেট করার বৈধতা আছে। কারণ, ওই ভবনে ছিল হামাসের সামরিক অফিস। ইসরাইলের এমন হামলা ও বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন এপিথর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গ্যারি প্রুইত। তিনি এমন বক্তব্যের পক্ষে তথ্যপ্রমাণ দাবি করেছেন ইসরাইলের কাছে।
ওদিকে কাতারের রাজধানী দোহাথয় গাজা হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। শনিবার দিনশেষে ওই র‍্যালিতে বক্তব্য রাখেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে। তিনি বলেছেন, এই শত্রুতার কারণ হলো জেরুজালেম। জায়নবাদীরা ভেবেছে তারা আল আকসা মসজিদকে ধ্বংস করে দিতে পারবে। তারা ভেবেছে আমাদের জনগণকে শেখ জারাহ এলাকা থেকে উচ্ছেদ করতে পারবে। আমি নেতানিয়াহুকে বলছি- আগুন নিয়ে খেলবেন না। আজকের এই যুদ্ধের শিরোনাম, ইনতিফাদার শিরোনাম হলো জেরুজালেম, জেরুজালেম, জেরুজালেম। ইনতিফাদা বলতে তিনি গণবিপ্লবের উল্লেখ করেছেন।

এ সপ্তাহের শুরুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা বলেছেন, সর্বশেষ এই লড়াইয়ের বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আইসিসি। এই লড়াইয়ে যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে কিনা তা এরই মধ্যে তদন্ত করা হচ্ছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে ডবল যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, হামাস বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করেছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকজনকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

সব পক্ষকে বৈষম্যহীনভাবে বেসামরিক নাগরিক ও মিডিয়ার অবকাঠামোকে টার্গেট করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। তিনি এসব টার্গেটকে অবশ্যই যেকোনো মূলে এড়িয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কয়েকদিনে এই সহিংসতা বন্ধ করতে মার্কিন কূটনীতির ফুলঝুরি দেখা গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দূত হাদি আমর শুক্রবার ইসরাইলে পৌঁছেছেন। শনিবার দিনশেষে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করেছেন। কিন্তু এই মধ্যস্থতার ভূমিকা জটিল হয়ে পড়তে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও বেশির ভাগ পশ্চিমা শক্তি হামাসের সঙ্গে কোনো আলোচনা করে না। তাদেরকে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। অন্যদিকে পশ্চিমতীর ভিত্তিক ক্ষমতা মাহমুদ আব্বাসের। গাজায় হামাসের ওপর তার কোনো প্রভাব নেই বললেই চলে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

ইসমাইল হানিয়ের হুঙ্কার- আগুন নিয়ে খেলবেন না

আপডেট সময় : ১২:৩৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মে ২০২১

১৬ মে ২০২১,আজকের মেঘনা ডটকম , ডেস্ক রিপোর্ট :

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে। নেতানিয়াহুকে তিনি বলেছেন- আগুন নিয়ে খেলবেন না। এই যুদ্ধের নাম হলো জেরুজালেম। ওদিকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে লড়াই অব্যাহত আছে। আজ রোববারও সেখানে মুহুর্মুহু বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইয়াহিয়া আল সিনওয়ারের বাড়ি টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে তারা। হামাস পরিচালিত টেলিভিশন স্টেশন থেকে এ কথা বলা হয়েছে। আরেক হামলায় গাজায় একজন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছেন।

আহত হয়েছেন তার স্ত্রী ও কন্যা। গত সোমবার শুরু হওয়া এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ৪১টি শিশুসহ কমপক্ষে ১৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন গাজায়। পক্ষান্তরে ইসরাইলে নিহত হয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সপ্তম দিনের মধ্যে উভয় পক্ষে চলছে এই লড়াই। ওদিকে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরে দূতরা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। আজ রোববার দিনের শেষে বিশেষ বৈঠকে বসার কথা রয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের।

এখন পর্যন্ত ইসরাইলের হামলার প্রতিশোধ নিতে হামাস শুধু রকেট ছুড়েছে। তার জবাবে সর্বাত্মক যুদ্ধের অংশ হিসেবে গাজায় ধ্বংসলীলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা একের পর এক আকাশচুম্বী ভবনকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে বোমা হামলা করে। শনিবার তারা আল জালা নামের একটি ১২ তলাবিশিষ্ট ভবন মুহূর্তেই মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। এই ভবনে আল জাজিরা, বার্তা সংস্থা এপি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ার অফিস বা ব্যুরো ছিল। এ হামলার জবাবে হামাস রকেট ছুড়েছে। ইসরাইলের দাবি আল জালা ভবনটি তাদের সেনাদের টার্গেট করার বৈধতা আছে। কারণ, ওই ভবনে ছিল হামাসের সামরিক অফিস। ইসরাইলের এমন হামলা ও বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন এপিথর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গ্যারি প্রুইত। তিনি এমন বক্তব্যের পক্ষে তথ্যপ্রমাণ দাবি করেছেন ইসরাইলের কাছে।
ওদিকে কাতারের রাজধানী দোহাথয় গাজা হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। শনিবার দিনশেষে ওই র‍্যালিতে বক্তব্য রাখেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে। তিনি বলেছেন, এই শত্রুতার কারণ হলো জেরুজালেম। জায়নবাদীরা ভেবেছে তারা আল আকসা মসজিদকে ধ্বংস করে দিতে পারবে। তারা ভেবেছে আমাদের জনগণকে শেখ জারাহ এলাকা থেকে উচ্ছেদ করতে পারবে। আমি নেতানিয়াহুকে বলছি- আগুন নিয়ে খেলবেন না। আজকের এই যুদ্ধের শিরোনাম, ইনতিফাদার শিরোনাম হলো জেরুজালেম, জেরুজালেম, জেরুজালেম। ইনতিফাদা বলতে তিনি গণবিপ্লবের উল্লেখ করেছেন।

এ সপ্তাহের শুরুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা বলেছেন, সর্বশেষ এই লড়াইয়ের বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আইসিসি। এই লড়াইয়ে যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে কিনা তা এরই মধ্যে তদন্ত করা হচ্ছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে ডবল যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, হামাস বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করেছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকজনকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

সব পক্ষকে বৈষম্যহীনভাবে বেসামরিক নাগরিক ও মিডিয়ার অবকাঠামোকে টার্গেট করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। তিনি এসব টার্গেটকে অবশ্যই যেকোনো মূলে এড়িয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কয়েকদিনে এই সহিংসতা বন্ধ করতে মার্কিন কূটনীতির ফুলঝুরি দেখা গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দূত হাদি আমর শুক্রবার ইসরাইলে পৌঁছেছেন। শনিবার দিনশেষে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করেছেন। কিন্তু এই মধ্যস্থতার ভূমিকা জটিল হয়ে পড়তে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও বেশির ভাগ পশ্চিমা শক্তি হামাসের সঙ্গে কোনো আলোচনা করে না। তাদেরকে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। অন্যদিকে পশ্চিমতীর ভিত্তিক ক্ষমতা মাহমুদ আব্বাসের। গাজায় হামাসের ওপর তার কোনো প্রভাব নেই বললেই চলে।