ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাঁজার কেকসহ গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্র রিমান্ডে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:১০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১ ২৩০ বার পড়া হয়েছে

১০ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

গাঁজার পাতার নির্যাস দিয়ে বিশেষ ধরনের কেক তৈরির অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও পল্টন এলাকা থেকে গাঁজার কেকসহ গ্রেপ্তার রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীকে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমানের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আসামিরা হলেন- আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) কম্পিউটার সায়েন্সের কাফিল ওয়ারা রাফিদ, ধানমণ্ডির অ্যাডভান্সড প্রফেশনালসের কাজী রিসালাত হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের সাইফুল ইসলাম সাইফ।

বৃহস্পতিবার তাদের ঢাকার আদালতে হাজির করে মোহাম্মদপুর থানার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনা জোনের এসআই জুলহাস উদ্দিন। আসামিপক্ষে আইনজীবী সানিয়া আরা মিনা ও আবু সায়েম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে আদালত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান মণ্ডল জামিনের বিরোধিতা করেন।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. শাহিনুর রহমান আসামিদের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বুধবার (৯ জুন)সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও পল্টন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মিশু বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই মাদকাসক্ত। এদের দুজন নিজ নিজ বাসায় গাঁজার নির্যাস দিয়ে কেক তৈরি করে বিক্রি করতো। একজন এসব কেক ডেলিভারি করতো।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন রাজধানীতে একাধিক চক্র গাঁজার নির্যাস দিয়ে কেক বানিয়ে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে আসছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে তারা বুধবার বিকালে মোহাম্মদপুরের শাহাজাহান রোডের একটি জায়গা থেকে প্রথমে রাফিদ ও সাইফকে আটক করে। এসময় তাদের কাছে প্রায় ১৮টি গাঁজার কেক পাওয়া যায়। তারা সেগুলো ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিল। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পল্টন এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে রিসালাত হোসেনকে ১২পিস গাঁজার কেকসহ আটক করা হয়।

গ্রেপ্তার রাফিদ ও রিসালাত জানিয়েছে, প্রতি পিস গাঁজার কেক তারা ৪ থেকে ৫ শ’ টাকায় বিক্রি করতো। প্রথম দিকে কাছের বন্ধুদের কাছে বিক্রি করলেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লোজ গ্রুপ তৈরি করে সেখানে বিক্রি করা শুরু করে। অর্ডার দিলে কখনও নিজে বা কখনও ডেলিভারিম্যানদের মাধ্যমে এসব মাদক পাঠানো হতো।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, উচ্চবিত্ত পরিবারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারাই ইন্টারনেট ঘেঁটে মাদকের অভিনব সব ব্যবহার করছে। এর আগে এলএসডিসহ যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারাও উচ্চবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী।

এলএসডিসহ গ্রেপ্তারকৃতদের একজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গাঁজার কেক বিক্রি চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত দুই গাঁজার কেক ব্যবসায়ীর মধ্যে রাফিদের বাবা ইদ্রিস আলী সিঙ্গাপুরে ব্যবসা করেন। মোহাম্মদপুরে তাদের নিজেদের বাড়ি রয়েছে। রিসালাতের বাবার নাম কাজী রওনাক হোসেন। তার দাদা প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক কাজী মোতাহার হোসেন। ইউডার চারুকলার শিক্ষার্থী সাইফ খিলাঁও সিপাহীবাগ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বাস করে। রাফিদ পড়াশোনার পাশাপাশি ম্যারাথন দৌড়েও অংশ নিয়েছিল। এমনকি সাইফের মতো সে নিয়মিত সাইক্লিংও করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

গাঁজার কেকসহ গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্র রিমান্ডে

আপডেট সময় : ০৯:১০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১

১০ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

গাঁজার পাতার নির্যাস দিয়ে বিশেষ ধরনের কেক তৈরির অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও পল্টন এলাকা থেকে গাঁজার কেকসহ গ্রেপ্তার রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীকে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমানের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আসামিরা হলেন- আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) কম্পিউটার সায়েন্সের কাফিল ওয়ারা রাফিদ, ধানমণ্ডির অ্যাডভান্সড প্রফেশনালসের কাজী রিসালাত হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের সাইফুল ইসলাম সাইফ।

বৃহস্পতিবার তাদের ঢাকার আদালতে হাজির করে মোহাম্মদপুর থানার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনা জোনের এসআই জুলহাস উদ্দিন। আসামিপক্ষে আইনজীবী সানিয়া আরা মিনা ও আবু সায়েম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে আদালত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান মণ্ডল জামিনের বিরোধিতা করেন।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. শাহিনুর রহমান আসামিদের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বুধবার (৯ জুন)সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও পল্টন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মিশু বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই মাদকাসক্ত। এদের দুজন নিজ নিজ বাসায় গাঁজার নির্যাস দিয়ে কেক তৈরি করে বিক্রি করতো। একজন এসব কেক ডেলিভারি করতো।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন রাজধানীতে একাধিক চক্র গাঁজার নির্যাস দিয়ে কেক বানিয়ে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে আসছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে তারা বুধবার বিকালে মোহাম্মদপুরের শাহাজাহান রোডের একটি জায়গা থেকে প্রথমে রাফিদ ও সাইফকে আটক করে। এসময় তাদের কাছে প্রায় ১৮টি গাঁজার কেক পাওয়া যায়। তারা সেগুলো ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিল। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পল্টন এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে রিসালাত হোসেনকে ১২পিস গাঁজার কেকসহ আটক করা হয়।

গ্রেপ্তার রাফিদ ও রিসালাত জানিয়েছে, প্রতি পিস গাঁজার কেক তারা ৪ থেকে ৫ শ’ টাকায় বিক্রি করতো। প্রথম দিকে কাছের বন্ধুদের কাছে বিক্রি করলেও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লোজ গ্রুপ তৈরি করে সেখানে বিক্রি করা শুরু করে। অর্ডার দিলে কখনও নিজে বা কখনও ডেলিভারিম্যানদের মাধ্যমে এসব মাদক পাঠানো হতো।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, উচ্চবিত্ত পরিবারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারাই ইন্টারনেট ঘেঁটে মাদকের অভিনব সব ব্যবহার করছে। এর আগে এলএসডিসহ যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারাও উচ্চবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী।

এলএসডিসহ গ্রেপ্তারকৃতদের একজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গাঁজার কেক বিক্রি চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত দুই গাঁজার কেক ব্যবসায়ীর মধ্যে রাফিদের বাবা ইদ্রিস আলী সিঙ্গাপুরে ব্যবসা করেন। মোহাম্মদপুরে তাদের নিজেদের বাড়ি রয়েছে। রিসালাতের বাবার নাম কাজী রওনাক হোসেন। তার দাদা প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক কাজী মোতাহার হোসেন। ইউডার চারুকলার শিক্ষার্থী সাইফ খিলাঁও সিপাহীবাগ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বাস করে। রাফিদ পড়াশোনার পাশাপাশি ম্যারাথন দৌড়েও অংশ নিয়েছিল। এমনকি সাইফের মতো সে নিয়মিত সাইক্লিংও করে।