শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভনে ডেকে দুলাভাইকে হত্যা
- আপডেট সময় : ১০:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুন ২০২১ ১৯৪ বার পড়া হয়েছে
১৪ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
পাবনার আটঘরিয়া এলাকায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রলোভন দেখিয়ে যুথি আক্তার ওরফে আদুরী (২৮) নামের এক নারী তার পরকীয়া প্রেমিক শাজাহানকে (৪০) দুলাভাইয়ের বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ওই নারীর দুলাভাই কাসেম মন্ডল (৫০) ও বোন শিউলী বেগমকে (৪২) পাবনার ফরিদপুর থানাধীন ধানুয়াঘাটা বাজার এলাকা থেকে রোববার (১৩ জুন) সকাল সোয়া ১০ টার দিকে গ্রেপ্তার করে পিবিআইয়ের সদস্যরা। তাদের গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পাঁচ আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে কাসেম মন্ডলের মেয়ের জামাই মো. ইব্রাহিম, যুথীর স্বামী জাহাঙ্গীর ও যুথিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই সূত্র জানায়, নিহত শাজাহানের ফটোস্ট্যাটের দোকান ছিলো। সেই দোকানে সাজাহানের সঙ্গে মাঝেমধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হতো যুথি আক্তার আদুরীর। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। অবিবাহিত শাজাহান যুথীকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করতে চাইতো। যুথি অতিষ্ঠ হয়ে বিষয়টি মুরব্বীদের জানান। তারা শাজাহানকে বিরত থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু শাজাহান কারো কথা শুনতে চায়নি। পরে যুথি বিষয়টি তার স্বামী জাহাঙ্গীরসহ বোন দুলাভাইকেও জানান এবং তারা সিদ্ধান্ত নেন তাকে ডেকে এনে হত্যা করবে।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুথীর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম শাজাহানকে হত্যার জন্য ১০টি ঘুমের ঔষধ কিনে যুথীকে দেয়। গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী যুথি শাজাহনকে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের লোভ দেখিয়ে জেলার আটঘরিয়া থানাধীন গঙ্গারামপুর গ্রামে যুথীর দুলাভাই কাসেম মন্ডল ও শিউলি দম্পতির বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে।
পরে যুথির স্বামী জাহাঙ্গীর, দুলাভাই কাসেম, বোন শিউলি ও কাসেমের মেয়ের জামাই ইব্রাহীম মিলে হাত-পা চেপে ধরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করার জন্য বস্তাবন্দি করে কাসেম মন্ডলের বসতবাড়ির টয়লেটের সেপটি ট্যাংকের ভিতরে ফেলে দিয়ে খড়-কুটা দিয়ে ঢেকে রাখে। পরে তারা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যায়।
এদিকে শাজাহানকে খুঁজে না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা পরদিন ১ এপ্রিল পাবনা সদর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করে। লাশ পচে গন্ধ বের হবার পর স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে গত ৫ এপ্রিল বস্তাবন্দি একটি লাশ আটঘরিয়া থানাধীন গঙ্গারামপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন গ্রেপ্তারকৃত কাসেম মন্ডলের বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পিবিআই পাবনা ইউনিট প্রধান পুলিশ সুপার ফজলে এলাহী জানান, শাহজাহানের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে যুথী আক্তার ওরফে আদুরী তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরকিয়ার জের ধরে শাহজাহান আলীর সাথে যুথী আক্তারের সম্পর্কের টানাপোড়ন চলছিলো।
তিনি আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত আসামিরা স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।