ঢাকা ০৭:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫ বছরে ১৫ অধ্যাপক নিয়ে চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:৫০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১ ২১২ বার পড়া হয়েছে

১৫ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

২০০৬ সালে সাতটি বিভাগ দিয়ে প্রতিষ্ঠা হলেও বর্তমানে ১৯টি বিভাগ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে দশ বিভাগে ১৫ জন অধ্যাপক থাকলেও নয় বিভাগে নেই কোন অধ্যাপক। ফলে অভিজ্ঞ শিক্ষকের কৌশলী পাঠদান, ভালো মানের গবেষণাসহ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক রয়েছে ২৫২ জন। এরমধ্যে অধ্যাপক রয়েছে ১৫ জন, সহযোগি অধ্যাপক ৫৪ জন, সহকারি অধ্যাপক ১০৯ জন এবং প্রভাষক রয়েছে ৭৪ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার থেকে জানা যায়, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নৃবিজ্ঞান বিভাগ, প্রত্নতত্ব বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে কোন অধ্যাপক নেই তবে অর্থনীতি বিভাগে দুইজন, লোক প্রশাসন বিভাগে একজন অধ্যাপক রয়েছে। কলা ও মানবিক অনুষদের ইংরেজি বিভাগে একজন, বাংলা বিভাগে দুই জন অধ্যাপক রয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ব্যবস্থাপনা বিভাগে দুইজন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগে দুইজন, মার্কেটিং বিভাগে একজন অধ্যাপক থাকলেও ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে কোন অধ্যাপক নেই। বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগে দুইজন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে একজন ও গণিত বিভাগে একজন অধ্যাপক থাকলেও পরিসংখ্যান বিভাগ, ফার্মেসী বিভাগে কোন অধ্যাপক নেই। প্রকৌশল অনুষদের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগ এবং আইন অনুষদের আইন বিভাগেও নেই কোন অধ্যাপক।

 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সময়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক রয়েছে ১০৯ জন ও নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ জন। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার থেকে এ তথ্য জানা যায়।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক, সহকারি অধ্যপক নিয়োগ দিলেও দেয়া হয় না অধ্যাপক। অনেক সময় অধ্যাপকের পদে নিয়োগ দেয়া হয় প্রভাষক। যে ১৫জন অধ্যাপক রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে থেকে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যাপক হয়েছে বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেপুটেশন পেয়ে দুই অধ্যাপক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছিলেন। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ও পেনশন বিধি নিশ্চিত না হওয়া, শিক্ষক গ্রুপিং, অপরাজনীতি এবং চরম অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে তাদের পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সময়ে খণ্ডকালীন অধ্যাপক এনে বিভিন্ন বিভাগে তাদের শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথে বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক না থাকলে কৌশলী পাঠদান থেকে বঞ্চিত হয় শিক্ষার্থীরা। অধ্যাপকদের গবেষণার অভিজ্ঞতা বেশি থাকায় ভালো মানের জার্নাল বের হয়। নতুন নতুন জ্ঞানের ক্ষেত্র তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে র‌্যাংকিং এগিয়ে আনতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তাছাড়া অধ্যাপকরা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পিএইচডি ও এমফিল করাতে পারে। প্রশাসনিক দক্ষতাও ভালো থাকে বলে জানান তারা।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজ্ঞান অনুষদের এক শিক্ষক জানান , যে বিভাগে অধ্যাপক নেই ওই বিভাগের শিক্ষকরা বাহির থেকে অধ্যাপক আসুক এটা চায় না। তাদের চাওয়া তাদের মধ্যে থেকে অধ্যাপক হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘অধ্যাপক নিয়োগের জন্য আমরা সার্কুলার দিয়ে থাকি তবে বাহির থেকে আবেদন না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে যোগ্যতা পূরণ করে অধ্যাপক নিয়োগ দেয়া হয়।’

পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় না বলে বাহির থেকে আসেনা এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে যারা এক জায়গা স্থায়ী হয়ে যায় তারা পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় যেতে চায় না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

১৫ বছরে ১৫ অধ্যাপক নিয়ে চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট সময় : ০৯:৫০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

১৫ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

২০০৬ সালে সাতটি বিভাগ দিয়ে প্রতিষ্ঠা হলেও বর্তমানে ১৯টি বিভাগ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে দশ বিভাগে ১৫ জন অধ্যাপক থাকলেও নয় বিভাগে নেই কোন অধ্যাপক। ফলে অভিজ্ঞ শিক্ষকের কৌশলী পাঠদান, ভালো মানের গবেষণাসহ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক রয়েছে ২৫২ জন। এরমধ্যে অধ্যাপক রয়েছে ১৫ জন, সহযোগি অধ্যাপক ৫৪ জন, সহকারি অধ্যাপক ১০৯ জন এবং প্রভাষক রয়েছে ৭৪ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার থেকে জানা যায়, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নৃবিজ্ঞান বিভাগ, প্রত্নতত্ব বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে কোন অধ্যাপক নেই তবে অর্থনীতি বিভাগে দুইজন, লোক প্রশাসন বিভাগে একজন অধ্যাপক রয়েছে। কলা ও মানবিক অনুষদের ইংরেজি বিভাগে একজন, বাংলা বিভাগে দুই জন অধ্যাপক রয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ব্যবস্থাপনা বিভাগে দুইজন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগে দুইজন, মার্কেটিং বিভাগে একজন অধ্যাপক থাকলেও ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে কোন অধ্যাপক নেই। বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগে দুইজন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে একজন ও গণিত বিভাগে একজন অধ্যাপক থাকলেও পরিসংখ্যান বিভাগ, ফার্মেসী বিভাগে কোন অধ্যাপক নেই। প্রকৌশল অনুষদের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগ এবং আইন অনুষদের আইন বিভাগেও নেই কোন অধ্যাপক।

 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সময়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক রয়েছে ১০৯ জন ও নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ জন। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার থেকে এ তথ্য জানা যায়।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক, সহকারি অধ্যপক নিয়োগ দিলেও দেয়া হয় না অধ্যাপক। অনেক সময় অধ্যাপকের পদে নিয়োগ দেয়া হয় প্রভাষক। যে ১৫জন অধ্যাপক রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে থেকে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যাপক হয়েছে বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেপুটেশন পেয়ে দুই অধ্যাপক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছিলেন। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ও পেনশন বিধি নিশ্চিত না হওয়া, শিক্ষক গ্রুপিং, অপরাজনীতি এবং চরম অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে তাদের পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সময়ে খণ্ডকালীন অধ্যাপক এনে বিভিন্ন বিভাগে তাদের শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথে বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক না থাকলে কৌশলী পাঠদান থেকে বঞ্চিত হয় শিক্ষার্থীরা। অধ্যাপকদের গবেষণার অভিজ্ঞতা বেশি থাকায় ভালো মানের জার্নাল বের হয়। নতুন নতুন জ্ঞানের ক্ষেত্র তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে র‌্যাংকিং এগিয়ে আনতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তাছাড়া অধ্যাপকরা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পিএইচডি ও এমফিল করাতে পারে। প্রশাসনিক দক্ষতাও ভালো থাকে বলে জানান তারা।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজ্ঞান অনুষদের এক শিক্ষক জানান , যে বিভাগে অধ্যাপক নেই ওই বিভাগের শিক্ষকরা বাহির থেকে অধ্যাপক আসুক এটা চায় না। তাদের চাওয়া তাদের মধ্যে থেকে অধ্যাপক হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘অধ্যাপক নিয়োগের জন্য আমরা সার্কুলার দিয়ে থাকি তবে বাহির থেকে আবেদন না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে যোগ্যতা পূরণ করে অধ্যাপক নিয়োগ দেয়া হয়।’

পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় না বলে বাহির থেকে আসেনা এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে যারা এক জায়গা স্থায়ী হয়ে যায় তারা পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় যেতে চায় না।