ঢাকা ১১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাচ-বাংলা ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১০:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১ ২১২ বার পড়া হয়েছে

১৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এডিসি ডিভিশনের (ঢাকা) সিনিয়র অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন মীর মো. শাহারুজ্জামান ওরফে রনি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী-সহ অন্য সহযোগীদের দিয়ে এটিএম বুথে লেনদেন করাতেন। লেনদেনের পর এটিএমের ইলেক্ট্রনিক জার্নাল এমনভাবে পরিবর্তন করে দিতেন যে টাকা তুলেও তথ্য সংরক্ষণ হতে এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন ব্যর্থ হয়েছে।

শুধু তাই নয়, এটিএম মনিটরিং রোস্টার টিমে কর্মরত অবস্থায় রনি নিজে উপস্থিত থেকে এবং কৌশলের মাধ্যমে বিভিন্ন এটিএমের ইলেট্রনিক জার্নাল পরিবর্তন করে ৬৩৭টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৩৬৩ টি লেনদেন করিয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১০০০ টাকা টাকা আত্মসাৎ করে দেশ ত্যাগ করেন। তদন্তে তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পায় ডিবি পুলিশ।

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন সায়মা আক্তার, আল-আমিন বাবু, মেহেনী হাসান (২) মামুন ও আসাদুজ্জামান আসাদ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের Automated Teller Machine (ATM) এর ইলেকট্রিক জার্নাল পরিবর্তন করে ওই টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ জুন) তাদের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া মোবাইল পর্যালোচনা ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এডিসি ডিভিশন, ঢাকা এর সিনিয়র অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিল মীর মো. শাহারুজ্জামান ওরফে রনি। ওই পদে কর্মরত থেকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী-সহ অন্যান্য গ্রেফতারকৃত সহযোগীদের দিয়ে এটিএম বুথে লেনদেন করাতেন।’

লেনদেনের পর এটিএম এর ইলেক্ট্রনিক জার্নাল এমনভাবে পরিবর্তন করে দিতেন যাতে পরবর্তী সময়ে এটিএম থেকে টাকা না পাওয়ার অভিযোগ সঠিক বলে প্রতীয়মান হয়। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম মনিটরিং রোস্টার টিম এ কর্মরত থাকা অবস্থায় রনি উপস্থিত থেকে এবং কৌশলের মাধ্যমে বিভিন্ন এটিএমের ইলেট্রনিক জার্নাল পরিবর্তন করে ৬৩৭টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৩৬৩ টি লেনদেন করিয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১০০০ টাকা আত্মসাৎ করেন।

ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, মোট ৯ ধাপে ডাচ বাংলা ব্যাংকের লেনদেনের পর এটিএম’র ইলেক্ট্রনিক জার্নাল এমনভাবে পরিবর্তন করে টাকা আত্মসাৎ করতেন। প্রথম ধাপে ডাচবাংলা ব্যাংকের স্যালারি/অন্যান্য অ্যাকাউন্ট প্রস্তুতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কোনো অনুমোদিত এজেন্ট এর মাধ্যমে বহুল শ্রমিক সংবলিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্যালারি/অন্যান্য অ্যাকাউন্ট খোলে।

প্রস্তুতকৃত এটিএম কার্ডসমূহ এজেন্টের কাছে হস্তান্তর: ডিবিবিএল এজেন্ট কর্তৃক আবেদনকৃত একাউন্ট ও এটিএম কার্ডসমূহ তৈরি হওয়ার সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে গ্রাহকের কাছে পাঠানোর উদ্দেশ্যে স্ব-স্ব এজেন্টের কাছে হস্তান্তর করে।

এজেন্টদের কাছ থেকে অবৈধভাবে এটিএম কার্ড হস্তান্তর: এজেন্টরা ডিবিবিএল এটিএম কার্ডগুলো টাকার বিনিময়ে গ্রাহকের কার্ড গ্রাহক কে না দিয়ে তাদের অজান্তে মূল অপরাধী চক্রের কাছে হস্তান্তর করে।

টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিকর্তৃক এটিএম কার্ডে জমা করা: অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিরা প্রথমে টাকা অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট করেন।

টাকা উত্তোলনে ব্যাংকের আইটি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ: টাকা এটিএম থেকে ডেবিট করার সময় ডিবিবিএল এর আইটি অফিসার এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন যেন টাকা উত্তোলনের সময় এটিএম বুথ কর্তৃক একাউন্টের বিপরীতে যে জার্নাল সৃষ্টি হয় সে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারে যাওয়ার আগে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার পরিবর্তন করে নেয়।

সার্ভার সংযোগ সাময়িক বিচ্ছিন্নকরণ: ডিবিবিএল এর আইটি অফিসার টাকা উত্তোলনের পূর্ব মূহূর্তে যে জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারের সঙ্গে থার্ড পার্টি সফটওয়ার এর মাধ্যমে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ সমূহ পরিচালিত হয় তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে।

জানাল পরিবর্তন এবং জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন: জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারের সঙ্গে এটিএম বুথের থার্ড পার্টি সফটওয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এটিএম বুথের টাকা উত্তোলনের সময় যে জার্নাল সৃষ্টি হয় তা জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারে জমা হয় না। এরইমধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার সৃষ্ট জার্নালের বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে সাকসেসফুল মেসেজকে আন-সাকসেসফুল মেসেজে রূপান্তরিত করার ফলে ওই মেসেজ পরবর্তীতে জার্নাল সার্ভারে গেলেও তা আর সাকসেসফুল মেসেজ হিসেবে গণ্য হয় না।

ব্যাংকের হট লাইনে অভিযোগ দাখিল: টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাচ-বাংলা ব্যাংকের হটলাইনে ফোন করে যা আইটি অফিসার কর্তৃক গৃহীত হয়। ফোন কলের মাধ্যমে সে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে অভিযোগ করে যে, সে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সময় তার ব্যালেন্স কেটে নেওয়ার পরও সে এটিএম বুথ থেকে টাকা পায়নি।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স সমন্বয়: অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেন। প্রাথমিকভাবে তিনি দেখেন যে, কার্ডটি এটিএম বুথে প্রবেশ করানো হয়েছিল কিনা এবং হয়ে থাকলে সৃষ্ট জার্নাল সাকসেসফুল কিনা। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার যখন দেখেন যে, টাকা উত্তোলনের জন্য কার্ডটি এটিএম বুথে প্রবেশ করানো হয়েছিল কিন্তু জার্নালটি আনসাকসেসফুল তখন উক্ত আইটি অফিসার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত একাউন্টে ব্যালেন্স সমন্বয় করে দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, রনির নেতৃত্বে ২০১৮ সাল থেকে এই অভিনব প্রতারণার কাজটি করেছিল। বর্তমানে মীর মো. শাহারুজ্জামান ওরফে রনি দেশের বাইরে আত্মগোপন করায় তাকে গ্রেফতারে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

ডাচ-বাংলা ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ

আপডেট সময় : ১০:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

১৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এডিসি ডিভিশনের (ঢাকা) সিনিয়র অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন মীর মো. শাহারুজ্জামান ওরফে রনি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী-সহ অন্য সহযোগীদের দিয়ে এটিএম বুথে লেনদেন করাতেন। লেনদেনের পর এটিএমের ইলেক্ট্রনিক জার্নাল এমনভাবে পরিবর্তন করে দিতেন যে টাকা তুলেও তথ্য সংরক্ষণ হতে এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন ব্যর্থ হয়েছে।

শুধু তাই নয়, এটিএম মনিটরিং রোস্টার টিমে কর্মরত অবস্থায় রনি নিজে উপস্থিত থেকে এবং কৌশলের মাধ্যমে বিভিন্ন এটিএমের ইলেট্রনিক জার্নাল পরিবর্তন করে ৬৩৭টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৩৬৩ টি লেনদেন করিয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১০০০ টাকা টাকা আত্মসাৎ করে দেশ ত্যাগ করেন। তদন্তে তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পায় ডিবি পুলিশ।

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন সায়মা আক্তার, আল-আমিন বাবু, মেহেনী হাসান (২) মামুন ও আসাদুজ্জামান আসাদ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের Automated Teller Machine (ATM) এর ইলেকট্রিক জার্নাল পরিবর্তন করে ওই টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ জুন) তাদের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া মোবাইল পর্যালোচনা ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এডিসি ডিভিশন, ঢাকা এর সিনিয়র অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিল মীর মো. শাহারুজ্জামান ওরফে রনি। ওই পদে কর্মরত থেকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী-সহ অন্যান্য গ্রেফতারকৃত সহযোগীদের দিয়ে এটিএম বুথে লেনদেন করাতেন।’

লেনদেনের পর এটিএম এর ইলেক্ট্রনিক জার্নাল এমনভাবে পরিবর্তন করে দিতেন যাতে পরবর্তী সময়ে এটিএম থেকে টাকা না পাওয়ার অভিযোগ সঠিক বলে প্রতীয়মান হয়। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম মনিটরিং রোস্টার টিম এ কর্মরত থাকা অবস্থায় রনি উপস্থিত থেকে এবং কৌশলের মাধ্যমে বিভিন্ন এটিএমের ইলেট্রনিক জার্নাল পরিবর্তন করে ৬৩৭টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৩৬৩ টি লেনদেন করিয়ে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১০০০ টাকা আত্মসাৎ করেন।

ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, মোট ৯ ধাপে ডাচ বাংলা ব্যাংকের লেনদেনের পর এটিএম’র ইলেক্ট্রনিক জার্নাল এমনভাবে পরিবর্তন করে টাকা আত্মসাৎ করতেন। প্রথম ধাপে ডাচবাংলা ব্যাংকের স্যালারি/অন্যান্য অ্যাকাউন্ট প্রস্তুতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কোনো অনুমোদিত এজেন্ট এর মাধ্যমে বহুল শ্রমিক সংবলিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্যালারি/অন্যান্য অ্যাকাউন্ট খোলে।

প্রস্তুতকৃত এটিএম কার্ডসমূহ এজেন্টের কাছে হস্তান্তর: ডিবিবিএল এজেন্ট কর্তৃক আবেদনকৃত একাউন্ট ও এটিএম কার্ডসমূহ তৈরি হওয়ার সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে গ্রাহকের কাছে পাঠানোর উদ্দেশ্যে স্ব-স্ব এজেন্টের কাছে হস্তান্তর করে।

এজেন্টদের কাছ থেকে অবৈধভাবে এটিএম কার্ড হস্তান্তর: এজেন্টরা ডিবিবিএল এটিএম কার্ডগুলো টাকার বিনিময়ে গ্রাহকের কার্ড গ্রাহক কে না দিয়ে তাদের অজান্তে মূল অপরাধী চক্রের কাছে হস্তান্তর করে।

টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিকর্তৃক এটিএম কার্ডে জমা করা: অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিরা প্রথমে টাকা অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট করেন।

টাকা উত্তোলনে ব্যাংকের আইটি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ: টাকা এটিএম থেকে ডেবিট করার সময় ডিবিবিএল এর আইটি অফিসার এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন যেন টাকা উত্তোলনের সময় এটিএম বুথ কর্তৃক একাউন্টের বিপরীতে যে জার্নাল সৃষ্টি হয় সে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারে যাওয়ার আগে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার পরিবর্তন করে নেয়।

সার্ভার সংযোগ সাময়িক বিচ্ছিন্নকরণ: ডিবিবিএল এর আইটি অফিসার টাকা উত্তোলনের পূর্ব মূহূর্তে যে জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারের সঙ্গে থার্ড পার্টি সফটওয়ার এর মাধ্যমে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ সমূহ পরিচালিত হয় তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে।

জানাল পরিবর্তন এবং জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন: জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারের সঙ্গে এটিএম বুথের থার্ড পার্টি সফটওয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এটিএম বুথের টাকা উত্তোলনের সময় যে জার্নাল সৃষ্টি হয় তা জার্নাল সংরক্ষণ সার্ভারে জমা হয় না। এরইমধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার সৃষ্ট জার্নালের বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে সাকসেসফুল মেসেজকে আন-সাকসেসফুল মেসেজে রূপান্তরিত করার ফলে ওই মেসেজ পরবর্তীতে জার্নাল সার্ভারে গেলেও তা আর সাকসেসফুল মেসেজ হিসেবে গণ্য হয় না।

ব্যাংকের হট লাইনে অভিযোগ দাখিল: টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাচ-বাংলা ব্যাংকের হটলাইনে ফোন করে যা আইটি অফিসার কর্তৃক গৃহীত হয়। ফোন কলের মাধ্যমে সে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে অভিযোগ করে যে, সে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সময় তার ব্যালেন্স কেটে নেওয়ার পরও সে এটিএম বুথ থেকে টাকা পায়নি।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স সমন্বয়: অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেন। প্রাথমিকভাবে তিনি দেখেন যে, কার্ডটি এটিএম বুথে প্রবেশ করানো হয়েছিল কিনা এবং হয়ে থাকলে সৃষ্ট জার্নাল সাকসেসফুল কিনা। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি অফিসার যখন দেখেন যে, টাকা উত্তোলনের জন্য কার্ডটি এটিএম বুথে প্রবেশ করানো হয়েছিল কিন্তু জার্নালটি আনসাকসেসফুল তখন উক্ত আইটি অফিসার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত একাউন্টে ব্যালেন্স সমন্বয় করে দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, রনির নেতৃত্বে ২০১৮ সাল থেকে এই অভিনব প্রতারণার কাজটি করেছিল। বর্তমানে মীর মো. শাহারুজ্জামান ওরফে রনি দেশের বাইরে আত্মগোপন করায় তাকে গ্রেফতারে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।