জনপ্রিয় যেসব খাবার পেটে মেদ জমায়
- আপডেট সময় : ০২:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ ২০০ বার পড়া হয়েছে
১৭ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
স্বাস্থ্যকর খাবার শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্যদিকে অস্বাস্থ্যকর খাবার হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্মৃতিভ্রংশের জন্যও দায়ী।
সময় কাটাতে বা আড্ডায় ভাজাপোড়া বা কড়া স্বাদের খাবার সবাই বেশ পন্দ করেন। তবে এসব খাবার নীরবে দেহের ওজন বাড়ায় ও কোমড়ের মাপ বড় করতে থাকে।
সাদা রুটি: যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার’ ও বস্টনের ‘হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টার’য়ের করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, শস্য খাওয়া ওজন কমাতে সক্ষম। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত শস্য ওজন কমানোর বদলে বরং তা আরও বাড়িয়ে তোলে।
আর এর মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত করা সাদা আটা থেকে তৈরি রুটি।
ডায়েট সোডা: বাড়তি ক্যালরি গ্রহণ না করতে ডায়েট সোডা পানীয় গ্রহণ করছেন? বরং ফলাফল হবে উল্টো।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়েট সোডা পান করা কোমড়ের আকার বাড়ায়। ‘আমেরিকান জেরিয়াট্রিকস সোসাইটি’র জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, সোডা পানকারীদের কোমড়ের অংশ কোমল পানীয় গ্রহণ করে না এমন লোকেদের তুলনায় বেশি স্ফীত।
গবেষকদের মতে, ডায়েট সোডা পানকারীরা ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমাতে যেয়ে বরং বেশি পান করে এর মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ফলের রস: বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন ফলের জুসের চেয়ে তাজা ফলের রস গ্রহণ করা উপকারী। কারণ প্যাকেটজাত ‘জুস’য়ের প্রতি কাপে প্রায় ৩৬ গ্রাম বাড়তি চিনি থাকে।
পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইট দিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বেশিরভাগ প্যাকেট বা বোতলজাত রসের মিষ্টি স্বাদের কারণ ফ্রুক্টোজ। যা এক ধরনের শর্করা পেটের মেদ বাড়নোতে ওস্তাদ।
তাই রস না খেয়ে সরাসরি ফল খাওয়া অনেক উপকারী।
আর সাধারণ পানির স্বাদ বাড়াতে চাইলে এতে সুগন্ধিযুক্ত টক ফল যেমন- কমলা, আঙুর যোগ করতে পারেন। আর খোসাসহ ব্যবহার করা আরও ভালো
কারণ এগুলোর খোসা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয় এবং চর্বি কাটাতে সহায়তা করে।
চকলেট: ‘ডার্ক চকলেট’ ভালো।
‘হার্ট’ সাময়িকীতে প্রকাশিত স্কটল্যান্ডের ‘ইউনিভার্সিটি অফ আবেরডিন’য়ের ‘স্কুল অফ মেডিসিন অ্যান্ড ডেন্টিস্ট্রি’র করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, দিনে ৩.৫ আউন্স ডার্ক চকোলেট খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি ও পেটের মেদ কমায়।
অন্যদিকে দুধের তৈরি চকলেট খাওয়া মানে প্রচুর শর্করা ও ক্যালরি গ্রহণ করা।
‘আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’য়ের করা এক গবেষণা থেকে জানা যায়, দুধের তৈরি চকলেট সবচেয়ে বেশি ওজন বাড়াতে সক্ষম। তাই এই ধরনের চকলেট না খাওয়াই ভালো।
টিনজাত সুপ: প্যাকেট বা টিন-জাত সুপ এখন বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তবে এই ধরনের ‘ইন্সট্যান্ট’ সুপ খাওয়ার একটু থামুন।
কারণ এসবে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম বা লবণ থাকে যা পেটে ফোলাভাব এবং ক্ষুধা বাড়ায়। ফলে পেট ভরা অনুভূতি কম কাজ করে। খাওয়ার পরিমাণ বাড়ে। যে কারণে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আলুর চিপস: হার্ভার্ডের গবেষকরা জানিয়েছেন, পেটের মেদ বাড়াতে আলুর চিপসের ভূমিকা রয়েছে। এর স্যাচুরেটেড ফ্যাট, বাড়তি লবণ পেটে মেদ ও ফোলাভাব আনে।
আর এগুলো এতটাই মুখরোচক যে, মুঠো মুঠো করে খেয়েও তৃপ্তি আসে না। ফলাফল অতিরিক্ত খাওয়া।
ফ্রোজেন কফি ড্রিংকস: সাধারণ কফি মোটেই খারাপ না। তবে এই গরমে ঠাণ্ডা কফির পানীয় গ্রহণ করা ক্ষতিকর।
ঘন ঘন ‘ফ্রোজেন কফি ড্রিংক্স’ উচ্চ ক্যালরিযুক্ত পানীয়। থাকে প্রচুর শর্করা ও দুগ্ধজাতীয় উপাদান থাকে।
‘পাবলিক হেলথ’য়ে ২০১৭ সালে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া’র করা গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ৭০ শতাংশ কফি পানকারীদের কাপে ক্যালরি বহুল চিনি ও ক্রিম পাওয়া যায়।
পিৎজা: যদিও পিৎজাতে নানান সবজির টুকরা থাকে তারপরও এই খাবার স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’য়ের অন্যতম উৎস। আর তা আসে ব্যবহার করা ‘চিজ’ থেকে।
পিৎজায় থাকা প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেইটেড চর্বি পেটে জমাট বেঁধে মেদ বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
কম চর্বিযুক্ত পেস্ট্রি: অনেকেই ‘কম চর্বি সমৃদ্ধ’ লেবেল দেখে খাবার ক্রয় করেন। এটা আসলে বিক্রয় কৌশল মাত্র।
পেস্ট্রি বা মাফিন ধরনের খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত ময়দা, চিনি ও সোডিয়াম থাকে যা পেটের মেদ বাড়ায়।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই: যে কোনো চর্বি-জাতীয় খাবারই ওজন বাড়ায়। কিন্তু দেহে মেদ জমাতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই জাদুর মতো কাজ করে।
হার্ভাডের করা এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভাজাপোড়া খায় তাদের প্রতি চার বছরে তিন পাউণ্ড ওজন বেড়েছে এবং যারা নিয়মিত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খান তাদের ওজন ১৩ পাউন্ড বেশি বেড়েছে।
আইস ক্রিম: মাঝে মধ্যে চলতে পারে, তাই বলে প্রায় দিন বা রাতে আইস ক্রিম খেলে ওজন বাড়বেই। কারণ, এটা চিনি সমৃদ্ধ, উচ্চ কার্বোহাইড্রেট যুক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এডউইনা ক্লার্ক বলেন, “অতিরিক্ত পরিশোধিত শর্করা পেটে মেদ জমায়।”
ছবি: রয়টার্স।