টোকেন বাণিজ্য ও দায়িত্বহীনতায় দীর্ঘ জ্যাম
- আপডেট সময় : ০৭:৩০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ ১৯৭ বার পড়া হয়েছে
১৭ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ যানজটের নগরী হিসেবে তকমা পেয়েছে। কয়েক ঘণ্টা লেগে যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে। দায় নিতে চান না কেউ! একে অপরকে দুষছেন।
জানা যায়, দায়িত্বশীলদের অবহেলা, ভঙ্কুর সড়ক আর যানবাহনের চাপ প্রধান কারণ। এছাড়াও বড় ধরনের একটি চক্র কাজ করছে যানজটের জন্য। বিভিন্ন সূত্র জানায়, কৃত্তিম যানজট সৃষ্টি করে একটি মহল ফয়দা লুটছে বিভিন্ন অজুহাতে। বাগিয়ে নিচ্ছে অর্থ।
সরেজমিনে দেখা যায়, আঞ্চলিক এই মহাসড়কটি মেরামতের সময় মূল রাস্তা ছেড়ে কয়েক ফুট কমিয়ে ফেলা হয়েছে। প্রশস্ততা কমে যাওয়ার দরুন যানজটের সৃষ্টি বলে জানান গাড়ি চালক ও ভুক্তভোগীরা। শুধু কোম্পানীগঞ্জ থেকে পাশের উপজেলা দেবীদ্বার পাঁচ মিনিটের পথ যেতেই সময় লাগে আধা ঘণ্টা। বিষয়টি বিরক্তিকর বলে জানান এক যাত্রী।
আবু তোহা নামে আরেক যাত্রী বলেন, কুমিল্লায় যাবো কোম্পানীগঞ্জ বসে আছি চল্লিশ মিনিটের মতো, হসপিটালে আমার খালা শাশুড়ি ভর্তি, আর কতোক্ষণ বসে থাকতে হবে তা জানি না। এ জ্যামের পরিস্থিতি কবে শেষ হয় তা জানি না, সাংবাদিকরা লিখে তবে কাজ হয় না কেন তাও বুঝে আসে না। এ সড়কে আর গাড়ি চালানো সম্ভব না বলে জানালেন নিউ জনতার এক গাড়ি চালক।
কুমিল্লা টু বি. বাড়িয়া সুগন্ধা পরিবহনের হেল্পার আক্ষেপের সুরে জানান, আমাদের ট্রিপের ওপর বেতন হয়। দৈনিক চার সিঙ্গেল ট্রিপ আগে মারা গেলেও এখন সম্ভব হয় না। জ্যামে যেন আটকে আছে আমাদের বেতন।
একাধিক সুত্র জানায়, দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক জোনের সার্জন, টিআই, কনস্টেবল ও দালাল চক্রের সদস্যরা যানজট সৃষ্টির অজুহাতে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায় করছে। এছাড়া ট্রাফিক টোকেনের অজুহাতে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। ট্রাফিক জোনের কার্যক্রম ও দায়িত্বের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জের বাস স্ট্যান্ড ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় রাস্তায় পার্ক করতে হচ্ছে গাড়ি ও অটো রিকশা এতে আরো বেশ দায়ী বলে জানান স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। যাত্রী ও গাড়ি চালকদের অভিযোগ বাস স্ট্যান্ড এখন কাদার পাহাড় আর বর্ষায় হাঁটু সমান পানি থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এটি নতুন করে সংস্কার করলে আর সমস্যা থাকবে না।
ঢাকাগামী তিশা গোল্ডেন পরিবহনের ম্যানেজার মারুফ উদ্দিন বলেন, টার্মিনালের ভিতর গাড়ি না রেখে রাস্তার ওপর পাকিং ও রোডের প্রশস্ততা কমে যাওয়া বড় কারণ। তিশা ছাড়া আর কোনো গাড়ী টার্মিনালে রাখে না। পানি নিষ্কাশনে ড্রেইনগুলো সচল করতে হবে।
দেবিদ্বার ট্রাফিক সাব-জোনের ইন্সপেক্টর সালেহ আহাম্মদ বলেন, কোম্পানীগঞ্জ আমার অতিরিক্ত দায়িত্ব। এই যানজট নিরসনে স্থানীয় দায়িত্ববানরা এগিয়ে আসতে হবে। টোকেন বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
মিরপুর হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মিদুল ক্রান্তী কুরী বলেন, কোম্পনাীগঞ্জ এলাকাকে যানজট মুক্ত রাখতে প্রতিনিয়ত আমাদের টিম কাজ করছে। এর দীর্ঘ স্থায়ী সমাধানে পরিবহন মালিক, শ্রমিক, ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগীতা প্রয়োজন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, আমরা মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। চলে আসলে যানজট আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এই যানজট মুক্ত করার ব্যাপারে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে বহুবার কথা বলেছি। তাদের আন্তরিক সহযোগীতা পেলে কোম্পানীগঞ্জকে যানজট মুক্ত রাখা যাবে।