ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌনকর্মীকে পিটিয়ে গোপনাঙ্গে মরিচ গুঁড়া দিলেন নারীনেত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৩:৩০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

১৭ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে পরকীয়া সন্দেহে রেহেনা বেগম (৩৫) নামে এক যৌনকর্মীকে পিটিয়ে জখম করে ক্ষতস্থান ও গোপনাঙ্গে মরিচ গুঁড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আহত অবস্থায় তিনি গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ ঘটনায় যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘অসহায় নারী ঐক্য কল্যাণ সমিতির’ সভানেত্রী ঝুমুর বেগম, তার ছেলে বাড়িওয়ালী, লিলি বাড়িওয়ালী, আলেয়া বাড়িওয়ালী, দুলালী ও পারভিনসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানান, রোববার রাত ১১টার তাকে তার নিজ ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় ঝুমুর বেগমের লোকজন। তারা তাকে অসহায় নারী ঐক্য কল্যাণ সমিতির কক্ষে আটকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এতে তিনি রক্তাক্ত হয়ে গেলে জখমের স্থানসহ তার যৌনাঙ্গে শুকনো মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী আরো বলেন, ‘আমার ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তার পুরো দৃশ্য ঝুমুর তার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখে। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তারা আমাকে ছেড়ে দিয়ে একপ্রকার গৃহবন্দী করে রাখে। সোমবার প্রায় সারা দিন ঘরে বন্দী থেকে সন্ধ্যার পর সুযোগ বুঝে পালিয়ে থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিই। পরে মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হই’।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঝুমুরের স্বামী ইউপি সদস্য জলিল ফকিরের পক্ষে নির্বাচন না করা, তার স্বামীর সঙ্গে আমার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করা এবং ঝুমুরকে আমি তাবিজ-কবচ করেছি বলে সন্দেহ করে তারা আমাকে এভাবে নির্যাতন করে। শুধু তাই নয়, এর আগে ঝুমুর আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে এবং আমার সব ভাড়াটিয়া মেয়েকে হাতিয়ে নিয়ে আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।

হাসপাতালের কর্তব্যরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, নির্যাতিতার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন আমরা পেয়েছি। তবে তার ক্ষত স্থানে আমরা মরিচের প্রয়োগ উপস্থিত পাইনি যেহেতু তিনি দুদিন পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার দুপুরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি আগের থেকে অনেকটাই ভালো আছেন।

নির্যাতনের বিষয় অভিযুক্ত ঝুমুর বেগমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, ওই নারী একই সঙ্গে ঢাকার সাভারের এক লোক ও স্থানীয় আরেকজন লোকের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে প্রায়ই তার ঝামেলা হয়। সোমবার রাতেও তাদের মধ্যে মারামারি হয়। এতে সে কিছুটা আহত হয়ে থাকতে পারে।

তিনি বলেন, ওই যৌনকর্মী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার অপরাধের জন্য সে জেল খেটেছে। তার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের ওপর সে অনেক জুলুম করে বলে তারা নিজেরাই বাড়ি ছেড়েছে। সে পরিকল্পিতভাবে অন্য কারো ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

যৌনকর্মীকে পিটিয়ে গোপনাঙ্গে মরিচ গুঁড়া দিলেন নারীনেত্রী

আপডেট সময় : ০৩:৩০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

১৭ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে পরকীয়া সন্দেহে রেহেনা বেগম (৩৫) নামে এক যৌনকর্মীকে পিটিয়ে জখম করে ক্ষতস্থান ও গোপনাঙ্গে মরিচ গুঁড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আহত অবস্থায় তিনি গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ ঘটনায় যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘অসহায় নারী ঐক্য কল্যাণ সমিতির’ সভানেত্রী ঝুমুর বেগম, তার ছেলে বাড়িওয়ালী, লিলি বাড়িওয়ালী, আলেয়া বাড়িওয়ালী, দুলালী ও পারভিনসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানান, রোববার রাত ১১টার তাকে তার নিজ ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় ঝুমুর বেগমের লোকজন। তারা তাকে অসহায় নারী ঐক্য কল্যাণ সমিতির কক্ষে আটকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এতে তিনি রক্তাক্ত হয়ে গেলে জখমের স্থানসহ তার যৌনাঙ্গে শুকনো মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী আরো বলেন, ‘আমার ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তার পুরো দৃশ্য ঝুমুর তার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখে। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তারা আমাকে ছেড়ে দিয়ে একপ্রকার গৃহবন্দী করে রাখে। সোমবার প্রায় সারা দিন ঘরে বন্দী থেকে সন্ধ্যার পর সুযোগ বুঝে পালিয়ে থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিই। পরে মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হই’।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঝুমুরের স্বামী ইউপি সদস্য জলিল ফকিরের পক্ষে নির্বাচন না করা, তার স্বামীর সঙ্গে আমার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করা এবং ঝুমুরকে আমি তাবিজ-কবচ করেছি বলে সন্দেহ করে তারা আমাকে এভাবে নির্যাতন করে। শুধু তাই নয়, এর আগে ঝুমুর আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে এবং আমার সব ভাড়াটিয়া মেয়েকে হাতিয়ে নিয়ে আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।

হাসপাতালের কর্তব্যরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, নির্যাতিতার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন আমরা পেয়েছি। তবে তার ক্ষত স্থানে আমরা মরিচের প্রয়োগ উপস্থিত পাইনি যেহেতু তিনি দুদিন পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার দুপুরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি আগের থেকে অনেকটাই ভালো আছেন।

নির্যাতনের বিষয় অভিযুক্ত ঝুমুর বেগমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, ওই নারী একই সঙ্গে ঢাকার সাভারের এক লোক ও স্থানীয় আরেকজন লোকের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে প্রায়ই তার ঝামেলা হয়। সোমবার রাতেও তাদের মধ্যে মারামারি হয়। এতে সে কিছুটা আহত হয়ে থাকতে পারে।

তিনি বলেন, ওই যৌনকর্মী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার অপরাধের জন্য সে জেল খেটেছে। তার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের ওপর সে অনেক জুলুম করে বলে তারা নিজেরাই বাড়ি ছেড়েছে। সে পরিকল্পিতভাবে অন্য কারো ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।