ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ ১৮৪ বার পড়া হয়েছে

১৭ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

কখনো ঘূর্ণিঝড়, কখনো ভূমিকম্প, কখনো অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, কখনো বন্যা, কখনো বিভিন্ন রোগ-বালাই দুর্যোগ আকারে দেখা দিচ্ছে। মারা যাচ্ছে মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাঠের পর মাঠ ফসল। বাড়ছে খাদ্য সংকট। ঘরবাড়ি মিশে যাচ্ছে মাটির সঙ্গে। ফলে মানুষ হারাচ্ছে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে পৃথিবীর।

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জলবায়ুর কু-প্রভাবে বিশ্বে মরুকরণও একটি অন্যতম সমস্যা। বিশ্ব মরুময়তা ও অনাবৃষ্টি প্রতিরোধ দিবস আজ। এ বছর দিবসটির স্লোগান ‘Restoration. Land. Recovery. We build back better with healthy land.’

১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পক্ষ থেকে খরা ও মরুকরণের প্রতি সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে নাইরোবিতে বিশ্ব মরুকরণবিরোধী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে রিও ডি জেনিরোয় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলনের পরপরই মরুকরণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

রিও সম্মেলনের এজেন্ডা-২১-এর প্রস্তাবটি ১৯৯২ সালে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে গৃহীত হয় এবং ইন্টার গভর্নমেন্টাল নেগোশিয়েটিং কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি মরুকরণ সংক্রান্ত খসড়া কনভেনশন চূড়ান্ত করে। ১৯৯৪ সালের জুন মাসে কনভেনশনের দলিল চূড়ান্ত হয়। এ কনভেনশনে ৫০টি দেশ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর ১৯৯৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয় দলিলটি। বাংলাদেশও এ কনভেনশন অনুমোদন করে। পরবর্তী সময়ে খরা ও মরুকরণ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তুলতে ১৭ জুন পালন করা হয় বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস।

জাতিসংঘ বলেছে, পৃথিবীর প্রায় দেড়শ’ কোটি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য ক্ষয়িষ্ণু ভূমির ওপর নির্ভরশীল। আর পৃথিবীর অতি দরিদ্রদের ৪২ ভাগই বাস করে ক্ষয়ে যাওয়া এলাকায়, যারা মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছে।

মরুকরণ যেভাবে বিশ্বব্যাপী মাথাব্যথার কারণ, তেমনি বাংলাদেশেও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জনসংখ্যা বাড়ার কারণে দিন দিন আমাদের ফসলি জমি কমে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে কমছে গাছপালা, বন-জঙ্গল। শুকিয়ে যাচ্ছে নদীগুলো। দিন দিন যেমন আমাদের ফসলি জমি কমছে, একই সঙ্গে খরায় উর্বরতা হারাচ্ছে জমি। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় পরিবেশের প্রতি আমাদের মনোযোগী হওয়া আবশ্যক।

‘গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান’ খুব সনাতন একটি স্লোগান হলেও এর গুরুত্ব বর্তমানে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। কারণ বিশ্বের প্রতিটি দেশেই স্বাভাবিক  আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন ঘটায় কমে যাচ্ছে শীতকালের স্থায়ীত্ব, বাড়ছে ভূমি ও পাহাড় ধস, ঘন ঘন ভূমিকম্প। এছাড়া খরা বন্যা টর্নেডো সাইক্লোনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে এবং ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে মরুময়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশেও।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য

আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

১৭ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

কখনো ঘূর্ণিঝড়, কখনো ভূমিকম্প, কখনো অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, কখনো বন্যা, কখনো বিভিন্ন রোগ-বালাই দুর্যোগ আকারে দেখা দিচ্ছে। মারা যাচ্ছে মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাঠের পর মাঠ ফসল। বাড়ছে খাদ্য সংকট। ঘরবাড়ি মিশে যাচ্ছে মাটির সঙ্গে। ফলে মানুষ হারাচ্ছে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে পৃথিবীর।

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জলবায়ুর কু-প্রভাবে বিশ্বে মরুকরণও একটি অন্যতম সমস্যা। বিশ্ব মরুময়তা ও অনাবৃষ্টি প্রতিরোধ দিবস আজ। এ বছর দিবসটির স্লোগান ‘Restoration. Land. Recovery. We build back better with healthy land.’

১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পক্ষ থেকে খরা ও মরুকরণের প্রতি সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে নাইরোবিতে বিশ্ব মরুকরণবিরোধী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে রিও ডি জেনিরোয় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলনের পরপরই মরুকরণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

রিও সম্মেলনের এজেন্ডা-২১-এর প্রস্তাবটি ১৯৯২ সালে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে গৃহীত হয় এবং ইন্টার গভর্নমেন্টাল নেগোশিয়েটিং কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি মরুকরণ সংক্রান্ত খসড়া কনভেনশন চূড়ান্ত করে। ১৯৯৪ সালের জুন মাসে কনভেনশনের দলিল চূড়ান্ত হয়। এ কনভেনশনে ৫০টি দেশ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর ১৯৯৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয় দলিলটি। বাংলাদেশও এ কনভেনশন অনুমোদন করে। পরবর্তী সময়ে খরা ও মরুকরণ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তুলতে ১৭ জুন পালন করা হয় বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস।

জাতিসংঘ বলেছে, পৃথিবীর প্রায় দেড়শ’ কোটি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য ক্ষয়িষ্ণু ভূমির ওপর নির্ভরশীল। আর পৃথিবীর অতি দরিদ্রদের ৪২ ভাগই বাস করে ক্ষয়ে যাওয়া এলাকায়, যারা মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছে।

মরুকরণ যেভাবে বিশ্বব্যাপী মাথাব্যথার কারণ, তেমনি বাংলাদেশেও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জনসংখ্যা বাড়ার কারণে দিন দিন আমাদের ফসলি জমি কমে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে কমছে গাছপালা, বন-জঙ্গল। শুকিয়ে যাচ্ছে নদীগুলো। দিন দিন যেমন আমাদের ফসলি জমি কমছে, একই সঙ্গে খরায় উর্বরতা হারাচ্ছে জমি। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় পরিবেশের প্রতি আমাদের মনোযোগী হওয়া আবশ্যক।

‘গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান’ খুব সনাতন একটি স্লোগান হলেও এর গুরুত্ব বর্তমানে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। কারণ বিশ্বের প্রতিটি দেশেই স্বাভাবিক  আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন ঘটায় কমে যাচ্ছে শীতকালের স্থায়ীত্ব, বাড়ছে ভূমি ও পাহাড় ধস, ঘন ঘন ভূমিকম্প। এছাড়া খরা বন্যা টর্নেডো সাইক্লোনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে এবং ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে মরুময়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশেও।