করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তে শীর্ষে খুলনা
- আপডেট সময় : ০১:৩৭:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১ ১৬১ বার পড়া হয়েছে
২৩ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিনিয়ত বাড়ছে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কোনোভাবেই মৃত্যুর মিছিল থামছে না। ঢাকাকে টপকে এখন খুলনা করোনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় এ বিভাগে সর্বাধিক ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা শনাক্তের হার ছিল সর্বোচ্চ ৪৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ সময়ে দেশে মৃত্যু ও শনাক্তের হারে শীর্ষে ছিল খুলনা বিভাগ।
এর আগে ১৭ জুন খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের হার ছিল। আর ২০ জুন বিভাগে রেকর্ড ২৮ জনের মৃত্যু হয়। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের করোনায় মৃত্যু এবং শনাক্তের হারে শীর্ষে উঠে এসেছে খুলনা বিভাগ।
এদিকে সম্প্রতি খুলনায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দু’দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তা কাজে আসেনি। সর্বশেষ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে ছিল খুলনার প্রশাসন। এ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২৮ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ৭৯টি মামলায় ৮২ জনকে ১ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়। খুলনার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ট্রেন ও বাস। চলছে না ইজিবাইক ও থ্রি হুইলার। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
মঙ্গলবার (২২ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে সোমবার থেকে মঙ্গলবার (গত ২৪ ঘণ্টায়) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে মারা যাওয়া মানুষের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এ বিভাগে সর্বাধিক ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, ঢাকা বিভাগে ১০ জন, বরিশাল বিভাগে তিনজন, সিলেট বিভাগে দুজন, রংপুর বিভাগে দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুজন রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় ১৪ জন, রাজশাহীতে ১৪ জন, চট্টগ্রামে ১০ জন, রংপুরে ৬ জন, সিলেটে ৩ জন ও বরিশালে ২ জন মারা গেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এ সময় ২৫ হাজার ৩৩৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ২৫ হাজার ২৮টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা রোগী শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগে। খুলনা বিভাগে ২ হাজার ২২৬টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৯৮ জনের। যা নমুনা পরীক্ষার তুলনায় ৪৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ঢাকা বিভাগের ১৩ হাজার ৭৪৯টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৪৯ জনের। এ বিভাগে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ।
এ ছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৭৫টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪৪ জনের। এখানে শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ২ হাজার ৬১৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৩২ জনের। এখানে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩ হাজার ৯১৩টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৬৩ জনের। এখানে শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
রংপুর বিভাগে ৭৪৬টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৫৮ জনের। এখানে শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭১ জনের। এখানে শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আর সিলেট বিভাগে ৬৪৯টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১১৩ জনের। এখানে শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তারের পরিচালক রাশেদা সুলতানা বলেন, সবাইকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা সংক্রমণ কমানো সম্ভব।