ঢাকা ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই বাসে দুইবার গণধর্ষণ, সাহায্য চাইতে গেলে আবারো গণধর্ষণ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১ ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

২৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চলন্ত বাসে এক তরুণী প্রথম দফা চালক ও হেলপারের ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সাহায্য চাইতে গিয়ে আরও দুই দফা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ধর্ষণের সঙ্গে সরাসরি অভিযুক্ত ৬ জন এবং ধর্ষণে সহায়তাকারী রয়েছেন আরো ৪ জন।

পুলিশ শুক্রবার (২৫ জুন) রাত ১০ টা পর্যন্ত ৬ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এরা হলেন- সীতাকুন্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার মো. দুলালের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩), বাঁশবাড়ীয়া এলাকার মো. ইয়াছিনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (১৮), মুরাদপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন রানা (২০), উত্তর ইদিলপুর এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৩), শীবপুর এলাকার মো. সালামত উল্লাহর ছেলে মো. ইসমাঈল (৩২), মিরসরাই উপজেলার মধ্যম কুরুয়া এলাকার মো. জেবল হোসেনের ছেলে মো. সাগর (২২)।

মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানান, গত বুধবার (২৩ জুন) সন্ধ্যার দিকে মিরসরাই থেকে এক তরুণী চাকা পরিবহনের বাসচালক আশরাফুল ইসলামকে জানান তিনি চট্টগ্রামের অলংকার যাবেন, তাকে যেনো পৌঁছে দেন। যাত্রীবাহী এই বাসে আশরাফুল ইসলাম তরুণীকে তুলে নেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড আসার পর বাসের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেন চালক ও তার সহযোগী। এই সময় তরুণী বাস থেকে নামতে চাইলেও তাকে নামতে দেওয়া হয়নি। তরুণীকে আটকে রেখে সীতাকুণ্ডের জুটমিল এলাকায় নিয়ে চালক ও তার সহকারী শাহাদাত ধর্ষণ করে। পরে রাত প্রায় ১১টার দিকে তারা তরুণীকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

তরুণীর বর্ণনার সূত্র ধরে পুলিশ আরো জানায়, বাসে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থানায় অভিযোগ দিতে তার পূর্ব পরিচিত রানা নামের এক তরুণকে ফোন করে। রানা তাকে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রা এলাকায় যেতে বলে। তরুণী চন্দ্রা যাওয়ার জন্য অপর একটি বাসে (নাম জানা যায়নি) উঠলে একা পেয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে ওই বাসের চালক ইসমাইল ও তার অজ্ঞাত পরিচয় সহযোগী। ধর্ষণের পর তারা তরুণীকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। তরুণী রানার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে রাত প্রায় ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে দেখা করে। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রানা দুই বন্ধু সাগর ও বেলালসহ মিরসরাই উপজেলার সাহেরখালী এলাকার বেড়িবাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে রানা, সাগর, বেলালসহ আরও কয়েকজন মিলে তরুণীকে তৃতীয় দফা ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ভোর রাতের দিকে এই তরুণীর মোবাইল ফোন ও নগদ ২ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। (বৃহস্পতিবার) সকাল হলে তরুণী প্রথমে সীতাকুণ্ড থানায় ও পরে মিরসরাই থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস এম রাশিদুল হক জানান, এই গণধর্ষনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৬ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অপরাপর সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে। ধর্ষিত তরুনীর প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া গ্রেপ্তার আসামিদের আজ (শনিবার) আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

দুই বাসে দুইবার গণধর্ষণ, সাহায্য চাইতে গেলে আবারো গণধর্ষণ

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১

২৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চলন্ত বাসে এক তরুণী প্রথম দফা চালক ও হেলপারের ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সাহায্য চাইতে গিয়ে আরও দুই দফা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ধর্ষণের সঙ্গে সরাসরি অভিযুক্ত ৬ জন এবং ধর্ষণে সহায়তাকারী রয়েছেন আরো ৪ জন।

পুলিশ শুক্রবার (২৫ জুন) রাত ১০ টা পর্যন্ত ৬ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এরা হলেন- সীতাকুন্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার মো. দুলালের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩), বাঁশবাড়ীয়া এলাকার মো. ইয়াছিনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (১৮), মুরাদপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন রানা (২০), উত্তর ইদিলপুর এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৩), শীবপুর এলাকার মো. সালামত উল্লাহর ছেলে মো. ইসমাঈল (৩২), মিরসরাই উপজেলার মধ্যম কুরুয়া এলাকার মো. জেবল হোসেনের ছেলে মো. সাগর (২২)।

মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানান, গত বুধবার (২৩ জুন) সন্ধ্যার দিকে মিরসরাই থেকে এক তরুণী চাকা পরিবহনের বাসচালক আশরাফুল ইসলামকে জানান তিনি চট্টগ্রামের অলংকার যাবেন, তাকে যেনো পৌঁছে দেন। যাত্রীবাহী এই বাসে আশরাফুল ইসলাম তরুণীকে তুলে নেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড আসার পর বাসের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেন চালক ও তার সহযোগী। এই সময় তরুণী বাস থেকে নামতে চাইলেও তাকে নামতে দেওয়া হয়নি। তরুণীকে আটকে রেখে সীতাকুণ্ডের জুটমিল এলাকায় নিয়ে চালক ও তার সহকারী শাহাদাত ধর্ষণ করে। পরে রাত প্রায় ১১টার দিকে তারা তরুণীকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

তরুণীর বর্ণনার সূত্র ধরে পুলিশ আরো জানায়, বাসে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থানায় অভিযোগ দিতে তার পূর্ব পরিচিত রানা নামের এক তরুণকে ফোন করে। রানা তাকে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রা এলাকায় যেতে বলে। তরুণী চন্দ্রা যাওয়ার জন্য অপর একটি বাসে (নাম জানা যায়নি) উঠলে একা পেয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে ওই বাসের চালক ইসমাইল ও তার অজ্ঞাত পরিচয় সহযোগী। ধর্ষণের পর তারা তরুণীকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। তরুণী রানার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে রাত প্রায় ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে দেখা করে। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রানা দুই বন্ধু সাগর ও বেলালসহ মিরসরাই উপজেলার সাহেরখালী এলাকার বেড়িবাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে রানা, সাগর, বেলালসহ আরও কয়েকজন মিলে তরুণীকে তৃতীয় দফা ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ভোর রাতের দিকে এই তরুণীর মোবাইল ফোন ও নগদ ২ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। (বৃহস্পতিবার) সকাল হলে তরুণী প্রথমে সীতাকুণ্ড থানায় ও পরে মিরসরাই থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস এম রাশিদুল হক জানান, এই গণধর্ষনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৬ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অপরাপর সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে। ধর্ষিত তরুনীর প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া গ্রেপ্তার আসামিদের আজ (শনিবার) আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।