ঢাকা ১০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যা দুই সন্তানের জনকের

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৭:২৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১ ১৬৯ বার পড়া হয়েছে

২৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

সম্পর্ক ছিন্ন করায় পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে টুনু চক্রবর্তী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির বিষপানে আত্মহত্যার করেছেন। শুক্রবার (২৫ জুন) রাতে বরিশালের উজিরপুরে এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

টুনু চক্রবর্তী উপজেলার হারতা বাজার সংলগ্ন এলাকার মৃত নারায়ণ চক্রবর্তীর ছেলে। তিনি হারতা বাজারে একটি কাউন্টারে কমিশনে লোকাল বাসের টিকিট বিক্রির করতেন। তার দুটি সন্তান রয়েছে।

স্থানীরা জানান, বেপরোয়া চলাফেরার কারণে ওই নারীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে তার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর আরেক যুবককে বিয়ে করেন তিনি। গত তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের টুনু চক্রবর্তীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই নারী। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। একপর্যায়ে বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য ওই নারী আদালতে মামলা করেন এবং বাসা ভাড়া নিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেন। প্রায় রাতেই টুনু চক্রবর্তী সেখানে রাত্রি যাপন করতেন।

মাস খানেক আগে ওই নারী স্থানীয় আরও দুই-তিনজন যুবকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। টুনু চক্রবর্তী বিষয়টি টের পেয়ে অন্য যুবকদের সঙ্গে তাকে মেলামেশা বন্ধ করতে বলেন। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে টুনু চক্রবর্তীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিন্ন করেন ওই নারী। কিন্তু এরপরও তার কাছে প্রায় রাতেই আসতেন টুনু চক্রবর্তী। কিন্তু পরকীয়া প্রেমিকা তাকে ঘরে প্রবেশ করতে দিতেন না। শুক্রবার রাতেও প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসেন টুনু চক্রবর্তী। কিন্তু তিনি ঘরের দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ক্ষোভে-অপমানে টুনু চক্রবর্তী বিষ পান করেন। ভোর রাতের দিকে স্থানীয়রা টুনু চক্রবর্তীকে উদ্ধার করে গ্রামের একজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। পল্লী চিকিৎসক হরেন রায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে টুনু চক্রবর্তীর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, বিষপানে নয়, টুনু চক্রবর্তীকে হত্যা করা হয়েছে। ওই নারী কয়েকজন যুবকের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়ায় টুনু চক্রবর্তীকে হত্যা করা হয়েছে। পরে বিষপান করে টুনু চক্রবর্তীর মৃত্যু হয়েছে বলে রটানো হচ্ছে। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

এদিকে বেলা ১১ সাড়ে টার দিকে টুনু হত্যার বিচারের দাবিতে তার স্বজন ও স্থানীয় লোকজন হারতা বাজার সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে উজিরপুর থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে তারা সড়ক থেকে সরে যান।

উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরকীয়া প্রেমিকাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যা দুই সন্তানের জনকের

আপডেট সময় : ০৭:২৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১

২৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

সম্পর্ক ছিন্ন করায় পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে টুনু চক্রবর্তী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির বিষপানে আত্মহত্যার করেছেন। শুক্রবার (২৫ জুন) রাতে বরিশালের উজিরপুরে এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

টুনু চক্রবর্তী উপজেলার হারতা বাজার সংলগ্ন এলাকার মৃত নারায়ণ চক্রবর্তীর ছেলে। তিনি হারতা বাজারে একটি কাউন্টারে কমিশনে লোকাল বাসের টিকিট বিক্রির করতেন। তার দুটি সন্তান রয়েছে।

স্থানীরা জানান, বেপরোয়া চলাফেরার কারণে ওই নারীর প্রথম স্বামীর সঙ্গে তার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর আরেক যুবককে বিয়ে করেন তিনি। গত তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের টুনু চক্রবর্তীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই নারী। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। একপর্যায়ে বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য ওই নারী আদালতে মামলা করেন এবং বাসা ভাড়া নিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেন। প্রায় রাতেই টুনু চক্রবর্তী সেখানে রাত্রি যাপন করতেন।

মাস খানেক আগে ওই নারী স্থানীয় আরও দুই-তিনজন যুবকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। টুনু চক্রবর্তী বিষয়টি টের পেয়ে অন্য যুবকদের সঙ্গে তাকে মেলামেশা বন্ধ করতে বলেন। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে টুনু চক্রবর্তীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিন্ন করেন ওই নারী। কিন্তু এরপরও তার কাছে প্রায় রাতেই আসতেন টুনু চক্রবর্তী। কিন্তু পরকীয়া প্রেমিকা তাকে ঘরে প্রবেশ করতে দিতেন না। শুক্রবার রাতেও প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসেন টুনু চক্রবর্তী। কিন্তু তিনি ঘরের দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ক্ষোভে-অপমানে টুনু চক্রবর্তী বিষ পান করেন। ভোর রাতের দিকে স্থানীয়রা টুনু চক্রবর্তীকে উদ্ধার করে গ্রামের একজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। পল্লী চিকিৎসক হরেন রায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে টুনু চক্রবর্তীর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, বিষপানে নয়, টুনু চক্রবর্তীকে হত্যা করা হয়েছে। ওই নারী কয়েকজন যুবকের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়ায় টুনু চক্রবর্তীকে হত্যা করা হয়েছে। পরে বিষপান করে টুনু চক্রবর্তীর মৃত্যু হয়েছে বলে রটানো হচ্ছে। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

এদিকে বেলা ১১ সাড়ে টার দিকে টুনু হত্যার বিচারের দাবিতে তার স্বজন ও স্থানীয় লোকজন হারতা বাজার সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে উজিরপুর থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে তারা সড়ক থেকে সরে যান।

উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরকীয়া প্রেমিকাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।