ঢাকা ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে আছেন মহানায়ক হিসেবে’

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১ ২১২ বার পড়া হয়েছে

০৩ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাঙালির হৃদয়ে আজও যিনি বেঁচে আছেন ইতিহাসের মহানায়ক হিসেবে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

শনিবার (৩ জুলাই) নবাব সিরাজউদ্দৌলার ২৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলন আয়োজিত ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে একচুলও ছাড় দেননি বরং বেনিয়াদের সঙ্গে করেছেন লড়াই তাদের মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। দেশ প্রেমে কেউ যদি উদ্বুদ্ধ হয়ে মৃত্যুহীন হতে চায় তবে তার জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সিরাজউদ্দৌলা।

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নবাব সিরাজকে জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছে। ইচ্ছা করলে তরুণ নবাব ব্রিটিশ বণিকদের বাণিজ্য সুবিধা কিছুটা বৃদ্ধি করে এবং তাদের ঔদ্ধত্য সহ্য করে বহু যুগ শান্তিতে নবাবী করে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তার অকৃত্রিম ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ তিনি সব শত্রুকে চিহ্নিত করে তাদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেশের স্বাধীনতাকে মজবুত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা পারেননি। আমাদের ইতিহাস বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস এবং আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষাগ্রহণ করি না।

ন্যাপ মহাসচিব আরো বলেন, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা যদিও সাফল্য লাভ করেন নাই কিন্তু তিনি স্বদেশকে তুলে দেননি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের হাতে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি বরং তাকে এজন্য তাকে অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, পলাশীর ষড়যন্ত্রে যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার শোচনীয় পরাজয় ঘটলেও ইংরেজরা ক্ষান্ত হয়নি সেদিন। এরপর তারা নবাবের চরিত্রে নানাভাবে কলঙ্কলেপন করতে থাকে। সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে কলকাতায় একটা মনুমেন্ট তৈরি হয়েছিলো। তার নাম ছিলো হলওয়েল মনুমেন্ট। পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে ১৯৪০ সালের ৩ জুলাই হলওয়ের মনুমেন্ট অপসারণের জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিলেন। বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ইংরেজদের বাধ্য করে হলওয়ের মনুমেন্ট তুলে নিতে। পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্যোগে ২৩ জুন প্রথম পলাশী দিবস উদযাপিত হয়েছিলো কলকাতায়। সঙ্গে ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং মওলানা আকরম খাঁ।

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, আজ ২০-৩০ বছর আগেও নবাব সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাস চর্চা ও সিরাজকে নিয়ে নাটক-সিনেমা বাংলার ঘরে ঘরে প্রচলিত ছিলো। আমাদের ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে আমরা নিজেরাই কবর রচনা করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে আছেন মহানায়ক হিসেবে’

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১

০৩ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাঙালির হৃদয়ে আজও যিনি বেঁচে আছেন ইতিহাসের মহানায়ক হিসেবে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

শনিবার (৩ জুলাই) নবাব সিরাজউদ্দৌলার ২৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলন আয়োজিত ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে একচুলও ছাড় দেননি বরং বেনিয়াদের সঙ্গে করেছেন লড়াই তাদের মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। দেশ প্রেমে কেউ যদি উদ্বুদ্ধ হয়ে মৃত্যুহীন হতে চায় তবে তার জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সিরাজউদ্দৌলা।

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নবাব সিরাজকে জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছে। ইচ্ছা করলে তরুণ নবাব ব্রিটিশ বণিকদের বাণিজ্য সুবিধা কিছুটা বৃদ্ধি করে এবং তাদের ঔদ্ধত্য সহ্য করে বহু যুগ শান্তিতে নবাবী করে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তার অকৃত্রিম ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ তিনি সব শত্রুকে চিহ্নিত করে তাদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেশের স্বাধীনতাকে মজবুত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা পারেননি। আমাদের ইতিহাস বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস এবং আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষাগ্রহণ করি না।

ন্যাপ মহাসচিব আরো বলেন, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা যদিও সাফল্য লাভ করেন নাই কিন্তু তিনি স্বদেশকে তুলে দেননি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের হাতে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি বরং তাকে এজন্য তাকে অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, পলাশীর ষড়যন্ত্রে যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার শোচনীয় পরাজয় ঘটলেও ইংরেজরা ক্ষান্ত হয়নি সেদিন। এরপর তারা নবাবের চরিত্রে নানাভাবে কলঙ্কলেপন করতে থাকে। সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে কলকাতায় একটা মনুমেন্ট তৈরি হয়েছিলো। তার নাম ছিলো হলওয়েল মনুমেন্ট। পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে ১৯৪০ সালের ৩ জুলাই হলওয়ের মনুমেন্ট অপসারণের জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিলেন। বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ইংরেজদের বাধ্য করে হলওয়ের মনুমেন্ট তুলে নিতে। পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্যোগে ২৩ জুন প্রথম পলাশী দিবস উদযাপিত হয়েছিলো কলকাতায়। সঙ্গে ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং মওলানা আকরম খাঁ।

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, আজ ২০-৩০ বছর আগেও নবাব সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাস চর্চা ও সিরাজকে নিয়ে নাটক-সিনেমা বাংলার ঘরে ঘরে প্রচলিত ছিলো। আমাদের ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে আমরা নিজেরাই কবর রচনা করছি।