একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, একটা হত্যা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৮:০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১ ১৮৯ বার পড়া হয়েছে
১০ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, একটা হত্যা হয়েছে। অনেকগুলো মানুষ মারা গেছে, মামলাতো হবেই। মামলা হবে, তদন্ত হবে। যদি কেউ সমান্যতম দোষী প্রমাণিত হয় তাদেরও বিচার হবে। তদন্তের আগে আমরা আর কিছু বলতে চাই না। তদন্ত শেষে অবশ্যই দোষীদের আইন অনুযায়ী বিচার হবে।’
শনিবার (১০ জুলাই) হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ওই কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘এ ঘটনার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কিছুর পরই আমরা বলতে পারবো কেন, কোন কারণে এখানে ঘটনাটি ঘটেছিল। যাই ঘটুক এখানে হৃদয়বিধারক ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এখানে যারা ইন্তেকাল করেছে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছে তারা সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। সরকারিভাবে যে সাহায্য-সহযোগিতা ডিসি তাৎক্ষণিকভাবে করেছে। এ ছাড়া, আমাদের আরও যা যা করার প্রয়োজন এ দুঃখলাঘব করার জন্য আমরা সব করবো।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্তের পরই বলা যাবে কার দোষ কতটুকু। কিন্তু তদন্তে কারো নির্মাণ ত্রুটি, শ্রমিক পরিচালনায় ত্রুটি বা কেউ যদি সামান্য ভুলও করে থাকেন তবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ সময় শিশুশ্রম নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তদন্তে সেটি বেরিয়ে আসলে অবশ্যই বিচার হবে।
শ্রমিকরা ছাদে তালাবদ্ধ ছিল এমন অভিযোগ সম্পর্কে মন্ত্রী তার বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, তদন্তের সামান্যতম ত্রুটি বা গাফিলতি যদি পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে কারখানার মালিক বর্তমানে কোথায় রয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আটজনকে আটক করেছি। সবাই নজরদারিতে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কীকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।
কারখানার সিঁড়ির দরজা তালাবদ্ধ থাকায় মৃতের সংখ্যা এত বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে, আগুনে পুড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।