ঢাকা ০১:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তনু হত্যা:৬ বছরেও বিচারের মুখ দেখেনি গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের কবর জিয়ারত

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২ ২৫০ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের ছয় বছর পূর্ণ হলো।

রবিবার (২০মার্চ)সোহাগী জাহানের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের দুটি এতিমখানা মাদ্রাসার ছাত্রদের দুপুরের খাবার পরিবেশন করে তাঁর জন্য দোয়া পরান তনুর বাবা ইয়ার হোসেন।আছরের নামাজের পর স্বজনদের নিয়ে মেয়ে তনুর কবর জিয়ারত করেন।এখনো আসামি শনাক্ত না হওয়ায় বিচারের আশা ছেড়ে-ই দিচ্ছেন স্বজনেরা।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন,‘সিআইডির মতো পিবিআইও জিজ্ঞাসাবাদে পুরোনো বিষয়ে ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন করে। কখন তনু ঘর থেকে বের হলো।কোথায় কোথায় পড়াতে যেত। কার বাসায় যেত।এখনো ওরা পাঁচ বছর আগের অবস্থানে আছে।আর কত জবানবন্দি দিতাম আমরা। বিচার নিয়া কী কইতাম? উপরওয়ালা বিচার করবে।’মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন,‘গত বছরের নভেম্বরে পিবিআই আমাকে দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ করে। আমি প্রশ্নের জবাব দিই। এর বাইরে আর কী বলার আছে? গরিব মানুষের টাকা নাই, পয়সা নাই। এই মামলার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। পাঁচ বছর পেরিয়ে ছয় বছর হয়ে গেল, কই বিচার তো পাইলাম না।’

২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউজের অদূরে কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২১ মার্চ বিকেলে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৬ সালের ২১ মার্চ সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলার প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম। চার দিন পরে ২৫ মার্চমামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলমকে। পরে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম তদন্ত করেন। চতুর্থ দফায় ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) জালাল উদ্দিন আহম্মদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

চার বছর পর গত বছরের ২১ অক্টোবর হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকার সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর পিবিআই ৩ বার কুমিল্লা সেনানিবাসে এসে মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ও তাঁদের ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পিবিআই প্রধান পুলিশের উপ-মহা-পরিদর্শক ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন,সিআইডির কাছ থেকে মামলার পুরো ডকেটটি নিয়ে তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। তাঁরা ঘটনাটি অনুসন্ধানের এমন কোনো বিষয় আছে কি না, যা সিআইডি অ্যাড্রেস করেনি,তা যাচাই করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

তনু হত্যা:৬ বছরেও বিচারের মুখ দেখেনি গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের কবর জিয়ারত

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের ছয় বছর পূর্ণ হলো।

রবিবার (২০মার্চ)সোহাগী জাহানের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের দুটি এতিমখানা মাদ্রাসার ছাত্রদের দুপুরের খাবার পরিবেশন করে তাঁর জন্য দোয়া পরান তনুর বাবা ইয়ার হোসেন।আছরের নামাজের পর স্বজনদের নিয়ে মেয়ে তনুর কবর জিয়ারত করেন।এখনো আসামি শনাক্ত না হওয়ায় বিচারের আশা ছেড়ে-ই দিচ্ছেন স্বজনেরা।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন,‘সিআইডির মতো পিবিআইও জিজ্ঞাসাবাদে পুরোনো বিষয়ে ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন করে। কখন তনু ঘর থেকে বের হলো।কোথায় কোথায় পড়াতে যেত। কার বাসায় যেত।এখনো ওরা পাঁচ বছর আগের অবস্থানে আছে।আর কত জবানবন্দি দিতাম আমরা। বিচার নিয়া কী কইতাম? উপরওয়ালা বিচার করবে।’মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন,‘গত বছরের নভেম্বরে পিবিআই আমাকে দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ করে। আমি প্রশ্নের জবাব দিই। এর বাইরে আর কী বলার আছে? গরিব মানুষের টাকা নাই, পয়সা নাই। এই মামলার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। পাঁচ বছর পেরিয়ে ছয় বছর হয়ে গেল, কই বিচার তো পাইলাম না।’

২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউজের অদূরে কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২১ মার্চ বিকেলে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৬ সালের ২১ মার্চ সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলার প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম। চার দিন পরে ২৫ মার্চমামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলমকে। পরে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম তদন্ত করেন। চতুর্থ দফায় ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) জালাল উদ্দিন আহম্মদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

চার বছর পর গত বছরের ২১ অক্টোবর হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকার সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর পিবিআই ৩ বার কুমিল্লা সেনানিবাসে এসে মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ও তাঁদের ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পিবিআই প্রধান পুলিশের উপ-মহা-পরিদর্শক ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন,সিআইডির কাছ থেকে মামলার পুরো ডকেটটি নিয়ে তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। তাঁরা ঘটনাটি অনুসন্ধানের এমন কোনো বিষয় আছে কি না, যা সিআইডি অ্যাড্রেস করেনি,তা যাচাই করছেন।