ঢাকা ০২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউরোপে কে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে, কে করছে না

অনলাইন ডেস্ক 
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ ২০২২ ১৭৬ বার পড়া হয়েছে

ইউক্রেনকে কতটা সামরিক সাহায্য দেয়া যায় এবং রাশিয়ার ওপর কতটা নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিৎ -এসব প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে এখনও মতপার্থক্য রয়েছে।

এই দ্বিধা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি বিভিন্ন সময় তার ক্রোধ প্রকাশ করেছেন। এমনকি, গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে নেটো জোটের বৈঠকে তার ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, “কে আমাদের বন্ধু, কে আমাদের সাহায্য করছে এবং কারা করছে না, আজ তার প্রমাণ হবে।” রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর কাছ থেকে ইউক্রেন কতটা সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে – এ নিয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী দি ইকনমিস্টের সাথে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি খোলাখুলি তার মতামত দিয়েছেন।

ফ্রান্স: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ব্যাপারে তার ক্রোধ এবং অসন্তোষ চেপে রাখেননি ইউক্রেনের নেতা। ফ্রান্স কেন ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দিচ্ছেনা – তা নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘তারা (ফ্রান্স) রাশিয়াকে ভয় পায়। এটাই সত্যি। যারা প্রথমে বড় বড় কথা বলে তারাই প্রথমে ভয় পায়।’ প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ একমাত্র ইউরোপীয় নেতা যিনি ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকে নিয়মিত প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।

“প্রেসিডেন্ট পুতিন আর ক্ষমতায় থাকতে পারেন না” – শনিবার পোল্যান্ডে এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দেওয়া এই বক্তব্যের খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। রোববার ফরাসী এক রেডিওতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাখোঁ বলেন, এখন এ ধরণের ‘গরম গরম কথা’ ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা তৈরি করবে।

জার্মানি: জার্মানি সম্পর্কে জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া মিশ্র, এবং তিনি মনে করেন বার্লিন এখনো প্রধানত ‘অর্থনীতির কাঁচ’ দিয়ে সমস্যাকে দেখছে। “তারা (জার্মানি) একটি ভারসাম্য রেখে চলার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সাথে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, এবং তারা পরিস্থিতিকে অর্থনীতির কাঁচ দিয়ে দেখছে। তারা মাঝে-মধ্যে কিছু সাহায্য করছে। আমার মনে হয় পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে সাথে তারা তাদের অবস্থান অদল-বদল করছে।” জেলেনস্কি বলেন জার্মানি দেখছে পরিস্থিতির প্রভাব তাদের ওপর কিভাবে পড়ে। ” দেশের ভেতর থেকে চাপ তৈরি হলে তারা আমাদের সাহায্য করবে। তারপর যখন তারা মনে করবে অনেক হয়েছে, তখন সাহায্য বন্ধ করে দেবে।”

ব্রিটেন: পশ্চিম ইউরোপে ব্রিটেন সম্পর্কে সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ব্রিটেন ভারসাম্য নিয়ে ভাবছে না এবং অন্যান্যদের চেয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার দেশকে অস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী। “হ্যাঁ, সত্যি কথা বলতে কি জনসনই একজন নেতা যিনি সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছেন…ব্রিটেন সন্দেহাতীতভাবে আমাদের পক্ষে। তারা কোনো ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছে না। সমস্যা সমাধানে ব্রিটেন অন্য কোনো বিকল্প ভাবছে না।” জেলেনস্কি বলেন, “ব্রিটেন চাইছে ইউক্রেন জিতুক এবং রাশিয়া হেরে যাক। কিন্তু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হোক – এটা ব্রিটেন চায় কিনা আমি সে সম্পর্কে নিশ্চিত নই।”

সূত্র: বিবিসি।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

ইউরোপে কে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে, কে করছে না

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ ২০২২

ইউক্রেনকে কতটা সামরিক সাহায্য দেয়া যায় এবং রাশিয়ার ওপর কতটা নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিৎ -এসব প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে এখনও মতপার্থক্য রয়েছে।

এই দ্বিধা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি বিভিন্ন সময় তার ক্রোধ প্রকাশ করেছেন। এমনকি, গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে নেটো জোটের বৈঠকে তার ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, “কে আমাদের বন্ধু, কে আমাদের সাহায্য করছে এবং কারা করছে না, আজ তার প্রমাণ হবে।” রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর কাছ থেকে ইউক্রেন কতটা সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে – এ নিয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী দি ইকনমিস্টের সাথে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি খোলাখুলি তার মতামত দিয়েছেন।

ফ্রান্স: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ব্যাপারে তার ক্রোধ এবং অসন্তোষ চেপে রাখেননি ইউক্রেনের নেতা। ফ্রান্স কেন ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দিচ্ছেনা – তা নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘তারা (ফ্রান্স) রাশিয়াকে ভয় পায়। এটাই সত্যি। যারা প্রথমে বড় বড় কথা বলে তারাই প্রথমে ভয় পায়।’ প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ একমাত্র ইউরোপীয় নেতা যিনি ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকে নিয়মিত প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।

“প্রেসিডেন্ট পুতিন আর ক্ষমতায় থাকতে পারেন না” – শনিবার পোল্যান্ডে এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দেওয়া এই বক্তব্যের খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। রোববার ফরাসী এক রেডিওতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাখোঁ বলেন, এখন এ ধরণের ‘গরম গরম কথা’ ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা তৈরি করবে।

জার্মানি: জার্মানি সম্পর্কে জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া মিশ্র, এবং তিনি মনে করেন বার্লিন এখনো প্রধানত ‘অর্থনীতির কাঁচ’ দিয়ে সমস্যাকে দেখছে। “তারা (জার্মানি) একটি ভারসাম্য রেখে চলার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সাথে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, এবং তারা পরিস্থিতিকে অর্থনীতির কাঁচ দিয়ে দেখছে। তারা মাঝে-মধ্যে কিছু সাহায্য করছে। আমার মনে হয় পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে সাথে তারা তাদের অবস্থান অদল-বদল করছে।” জেলেনস্কি বলেন জার্মানি দেখছে পরিস্থিতির প্রভাব তাদের ওপর কিভাবে পড়ে। ” দেশের ভেতর থেকে চাপ তৈরি হলে তারা আমাদের সাহায্য করবে। তারপর যখন তারা মনে করবে অনেক হয়েছে, তখন সাহায্য বন্ধ করে দেবে।”

ব্রিটেন: পশ্চিম ইউরোপে ব্রিটেন সম্পর্কে সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ব্রিটেন ভারসাম্য নিয়ে ভাবছে না এবং অন্যান্যদের চেয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার দেশকে অস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী। “হ্যাঁ, সত্যি কথা বলতে কি জনসনই একজন নেতা যিনি সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছেন…ব্রিটেন সন্দেহাতীতভাবে আমাদের পক্ষে। তারা কোনো ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছে না। সমস্যা সমাধানে ব্রিটেন অন্য কোনো বিকল্প ভাবছে না।” জেলেনস্কি বলেন, “ব্রিটেন চাইছে ইউক্রেন জিতুক এবং রাশিয়া হেরে যাক। কিন্তু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হোক – এটা ব্রিটেন চায় কিনা আমি সে সম্পর্কে নিশ্চিত নই।”

সূত্র: বিবিসি।