ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রকল্পের’ উদ্বোধন করবেন ভারত -বাংলাদেশ’র প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০২:২৮:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২ ১১২ বার পড়া হয়েছে

১ আগষ্ট ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,

ডেস্ক রিপোর্ট।।

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিন দিনের সফরে ভারতে আসবেন। শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী মিলে ১৩২০ মেগাওয়াট ‘মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার স্টেশনটি’ যৌথভাবে উদ্বোধন

করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ-কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত, কয়লাভিত্তিক স্টেশনটি স্থাপন করছে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। ভারতের এনটিপিসি এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটির আনুমানিক ব্যয় মূল্য ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যে কোনো সময় ভারত সফর করবেন এবং দুই থেকে তিন দিন অবস্থান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকা দিল্লীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে অন্যতম হওয়ায় মোদী সরকার এই সফরটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লীতে আসার আগে, ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের জন্য কলকাতা-চট্টগ্রাম-মংলা বন্দরের মধ্যে পরীক্ষামূলক সড়ক সংযোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। আশা করা যাচ্ছে, কোলকাতা থেকে প্রথম চালানটি ১৬ টন লোহার পাইপের কন্টেইনার নিয়ে আগস্টের ৫ তারিখ পশুর নদীর তীরে মংলা বন্দরে পৌঁছাবে, যা পরে তামাবিল-ডাউকি সীমান্ত পয়েন্ট ব্যবহার করে মেঘালয়ে পৌঁছাবে; এবং ৮.৫ টনের প্রি-ফোম আরেকটি কন্টেইনারে করে বীরবীরবাজার-শ্রীমন্তপুর সীমান্ত পয়েন্ট থেকে আসামে যাবে। এটি বাস্তবায়িত হলে ভারতের জন্য উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে পৌঁছানোর জন্য সস্তা এবং বিকল্প পথ তৈরি হবে এবং একইসাথে বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি-আমদানি কন্টেইনারও বহন করবে।

বাংলাদেশ ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায়, মোদী সরকার দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশে জরুরি ভাবে প্রয়োজনীয় গম রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে যার ফলস্বরূপ বাংলাদেশে গমের দাম কমেছে, এবং ঢাকার মূল্যস্ফীতির উদ্বেগ কমিয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে প্রায় ৬৬ শতাংশ গম সরবরাহ করে, যেখানে প্রতি বছর ইউক্রেন থেকে আমদানি করা হয় প্রায় ১৫ শতাংশ, যদিও তা রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ ঋণের জন্য আইএমএফের সাথে যোগাযোগ করলেও, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো চলমান অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হারে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের মতো ঢাকাও মার্কিন ডলারের কঠোরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে রপ্তানি ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। যাইহোক, পাকিস্তানি রুপি এবং শ্রীলঙ্কান রুপির তুলনায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশী মুদ্রা টাকার নিজেদের মান এখনও বজায় রেখেছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন সমৃদ্ধ হয়েছে, তখন বাংলাদেশে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগী সংগঠন জামায়েত-ই-ইসলামী সীমান্ত এলাকায় ইসলামিক উগ্রপন্থা বৃদ্ধি করতে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। যদিও ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী জামায়াত জাতীয় নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে না। কিন্তু হেফাজত-ই-ইসলাম, জামায়েত-উল-মুজাহিদীন এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের মতো অন্যান্য উগ্রপন্থী সংগঠনের সাথে এই গোষ্ঠীটি বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আগুনে ঘি ঢালার জন্য রোহিঙ্গা অভিবাসীরা পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগিতায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের জন্য সমস্যা তৈরি করতে তৎপর রয়েছে। শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অর্থনীতির তত্ত্বাবধানে থাকবেন। বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থারা যদি না এইসব উগ্র ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এবং এদের নিষ্ক্রিয় না করে তাহলে আগামী বছরের নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে।

লেখক: শিশির গুপ্ত, হিন্দুস্তান টাইমস
অনুবাদ: অরুণাভ দাস, বাংলা ইনসাইডার

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রকল্পের’ উদ্বোধন করবেন ভারত -বাংলাদেশ’র প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:২৮:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২

১ আগষ্ট ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,

ডেস্ক রিপোর্ট।।

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিন দিনের সফরে ভারতে আসবেন। শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী মিলে ১৩২০ মেগাওয়াট ‘মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার স্টেশনটি’ যৌথভাবে উদ্বোধন

করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ-কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত, কয়লাভিত্তিক স্টেশনটি স্থাপন করছে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। ভারতের এনটিপিসি এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটির আনুমানিক ব্যয় মূল্য ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যে কোনো সময় ভারত সফর করবেন এবং দুই থেকে তিন দিন অবস্থান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকা দিল্লীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে অন্যতম হওয়ায় মোদী সরকার এই সফরটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লীতে আসার আগে, ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের জন্য কলকাতা-চট্টগ্রাম-মংলা বন্দরের মধ্যে পরীক্ষামূলক সড়ক সংযোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। আশা করা যাচ্ছে, কোলকাতা থেকে প্রথম চালানটি ১৬ টন লোহার পাইপের কন্টেইনার নিয়ে আগস্টের ৫ তারিখ পশুর নদীর তীরে মংলা বন্দরে পৌঁছাবে, যা পরে তামাবিল-ডাউকি সীমান্ত পয়েন্ট ব্যবহার করে মেঘালয়ে পৌঁছাবে; এবং ৮.৫ টনের প্রি-ফোম আরেকটি কন্টেইনারে করে বীরবীরবাজার-শ্রীমন্তপুর সীমান্ত পয়েন্ট থেকে আসামে যাবে। এটি বাস্তবায়িত হলে ভারতের জন্য উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে পৌঁছানোর জন্য সস্তা এবং বিকল্প পথ তৈরি হবে এবং একইসাথে বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি-আমদানি কন্টেইনারও বহন করবে।

বাংলাদেশ ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায়, মোদী সরকার দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশে জরুরি ভাবে প্রয়োজনীয় গম রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে যার ফলস্বরূপ বাংলাদেশে গমের দাম কমেছে, এবং ঢাকার মূল্যস্ফীতির উদ্বেগ কমিয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে প্রায় ৬৬ শতাংশ গম সরবরাহ করে, যেখানে প্রতি বছর ইউক্রেন থেকে আমদানি করা হয় প্রায় ১৫ শতাংশ, যদিও তা রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ ঋণের জন্য আইএমএফের সাথে যোগাযোগ করলেও, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো চলমান অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হারে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের মতো ঢাকাও মার্কিন ডলারের কঠোরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে রপ্তানি ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। যাইহোক, পাকিস্তানি রুপি এবং শ্রীলঙ্কান রুপির তুলনায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশী মুদ্রা টাকার নিজেদের মান এখনও বজায় রেখেছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন সমৃদ্ধ হয়েছে, তখন বাংলাদেশে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগী সংগঠন জামায়েত-ই-ইসলামী সীমান্ত এলাকায় ইসলামিক উগ্রপন্থা বৃদ্ধি করতে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। যদিও ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী জামায়াত জাতীয় নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে না। কিন্তু হেফাজত-ই-ইসলাম, জামায়েত-উল-মুজাহিদীন এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের মতো অন্যান্য উগ্রপন্থী সংগঠনের সাথে এই গোষ্ঠীটি বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আগুনে ঘি ঢালার জন্য রোহিঙ্গা অভিবাসীরা পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগিতায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের জন্য সমস্যা তৈরি করতে তৎপর রয়েছে। শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অর্থনীতির তত্ত্বাবধানে থাকবেন। বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থারা যদি না এইসব উগ্র ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এবং এদের নিষ্ক্রিয় না করে তাহলে আগামী বছরের নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে।

লেখক: শিশির গুপ্ত, হিন্দুস্তান টাইমস
অনুবাদ: অরুণাভ দাস, বাংলা ইনসাইডার