ঢাকা ০২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের কূটনীতিকরা বিদেশে কি করছেন?

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ অগাস্ট ২০২২ ১২৩ বার পড়া হয়েছে

২ আগষ্ট ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,

ডেস্ক রিপোর্ট

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস গুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কূটনীতিকদের নিয়ে বিতর্ক যেন কিছুতেই থামছে না। সরকার বিভিন্ন স্থানে কূটনীতিকদের পরিবর্তন করেছেন, তারপরও নিত্যনতুন বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের প্রশাসনের এলিট ক্যাডার হিসেবে পরিচিত পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা, যোগ্যতা এবং দেশপ্রেম নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলা ইনসাইডার জানান সম্প্রতি জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন কাজী আনারকলিকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তার বাসায় নিষিদ্ধ মাদক মারিজুয়ানা পাওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইন্দোনেশিয়া সরকারের অনুরোধে তাকে প্রত্যাহার করা হয় বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে যে, কাজী আনারকলির ব্যাপারে আগেও সমস্যা ছিলো। এর আগে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক দায়িত্ব নৈতিক পালন করছিলেন। সেখানেও দায়িত্ব পালনের সময় তার কাজের গৃহকর্মী নিখোঁজ হয়ে যায়। এই নিখোঁজ হওয়ার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুরোধে তাকে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছিল সরকার। প্রশ্ন উঠেছে যে, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন, তাকে আবার কিভাবে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় পোস্টিং দেওয়া হলো?

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। জামায়াত-বিএনপি ঘরনার ওই রাষ্ট্রদূত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসেই বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থ সংরক্ষণ করছিলেন। সরকারি এ নিয়ে তদন্ত করার পর যখন বুঝতে পারেন যে, তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করছেন না, তখন তাকে সরিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেন। নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হয়েছে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে। কিন্তু বাংলাদেশের কূটনীতিকরা বিদেশে কি করছেন? এসব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এই বিতর্ক নতুন নয়। বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন কূটনীতিকদের দায়িত্বহীনতা, অযোগ্যতা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। একটি দেশে একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব হলো, সেই দেশে অবস্থান করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করা। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, কূটনীতিকরা এটাকে এক ধরনের প্রমোদ বিহার মনে করছেন। তারা সেখানে আরাম-আয়েশে জীবন-যাপন করছেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিপুল পরিমাণ ডলার খরচ করে তাদের যে বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে, সেই বেতন-ভাতার দিয়ে তারা কোনো দায়িত্বশীল কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতেন না। বরং নানা রকম বিতর্কে তারা জড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের একজন কূটনীতিক নেপালে গিয়ে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। জাপানে আরেকজন কূটনীতিকের বিরুদ্ধে গুরুতর নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল। লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা করেছিল তারেক জিয়ার লোকজন। সেই সময়ে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের যথাযথ দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এরকম অনেক ঘটনাই ঘটছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ক্যাডার হলো সবচেয়ে এলিট ক্যাডার। সবচেয়ে মেধাবী ছেলে মেয়েরা এই ক্যাডারের যুক্ত হন। এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করেন। কিন্তু রাষ্ট্রের এত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে তারা কেন এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন, সেটি একটি প্রশ্ন। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনায় এসেছে যে, বাংলাদেশের এত কূটনীতিক বিদেশে থাকার দরকার আছে কিনা, নাকি এই কূটনীতিকদের রাজনীতিকরণ করতে হবে। দেখা যাচ্ছে যে, রাজনৈতিক বিবেচনায় যাদেরকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে তারা অনেক ক্ষেত্রেই পেশাদার কূটনীতিকদের চেয়ে ভালো কাজ করছেন। এই সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে এখন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও তোলপাড় চলছে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

বাংলাদেশের কূটনীতিকরা বিদেশে কি করছেন?

আপডেট সময় : ০৯:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ অগাস্ট ২০২২

২ আগষ্ট ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,

ডেস্ক রিপোর্ট

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস গুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কূটনীতিকদের নিয়ে বিতর্ক যেন কিছুতেই থামছে না। সরকার বিভিন্ন স্থানে কূটনীতিকদের পরিবর্তন করেছেন, তারপরও নিত্যনতুন বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের প্রশাসনের এলিট ক্যাডার হিসেবে পরিচিত পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা, যোগ্যতা এবং দেশপ্রেম নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলা ইনসাইডার জানান সম্প্রতি জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন কাজী আনারকলিকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তার বাসায় নিষিদ্ধ মাদক মারিজুয়ানা পাওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইন্দোনেশিয়া সরকারের অনুরোধে তাকে প্রত্যাহার করা হয় বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে যে, কাজী আনারকলির ব্যাপারে আগেও সমস্যা ছিলো। এর আগে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক দায়িত্ব নৈতিক পালন করছিলেন। সেখানেও দায়িত্ব পালনের সময় তার কাজের গৃহকর্মী নিখোঁজ হয়ে যায়। এই নিখোঁজ হওয়ার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুরোধে তাকে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছিল সরকার। প্রশ্ন উঠেছে যে, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন, তাকে আবার কিভাবে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় পোস্টিং দেওয়া হলো?

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। জামায়াত-বিএনপি ঘরনার ওই রাষ্ট্রদূত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসেই বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থ সংরক্ষণ করছিলেন। সরকারি এ নিয়ে তদন্ত করার পর যখন বুঝতে পারেন যে, তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করছেন না, তখন তাকে সরিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেন। নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হয়েছে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে। কিন্তু বাংলাদেশের কূটনীতিকরা বিদেশে কি করছেন? এসব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এই বিতর্ক নতুন নয়। বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন কূটনীতিকদের দায়িত্বহীনতা, অযোগ্যতা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। একটি দেশে একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব হলো, সেই দেশে অবস্থান করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করা। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, কূটনীতিকরা এটাকে এক ধরনের প্রমোদ বিহার মনে করছেন। তারা সেখানে আরাম-আয়েশে জীবন-যাপন করছেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিপুল পরিমাণ ডলার খরচ করে তাদের যে বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে, সেই বেতন-ভাতার দিয়ে তারা কোনো দায়িত্বশীল কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতেন না। বরং নানা রকম বিতর্কে তারা জড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের একজন কূটনীতিক নেপালে গিয়ে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। জাপানে আরেকজন কূটনীতিকের বিরুদ্ধে গুরুতর নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল। লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা করেছিল তারেক জিয়ার লোকজন। সেই সময়ে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের যথাযথ দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এরকম অনেক ঘটনাই ঘটছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ক্যাডার হলো সবচেয়ে এলিট ক্যাডার। সবচেয়ে মেধাবী ছেলে মেয়েরা এই ক্যাডারের যুক্ত হন। এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করেন। কিন্তু রাষ্ট্রের এত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে তারা কেন এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন, সেটি একটি প্রশ্ন। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনায় এসেছে যে, বাংলাদেশের এত কূটনীতিক বিদেশে থাকার দরকার আছে কিনা, নাকি এই কূটনীতিকদের রাজনীতিকরণ করতে হবে। দেখা যাচ্ছে যে, রাজনৈতিক বিবেচনায় যাদেরকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে তারা অনেক ক্ষেত্রেই পেশাদার কূটনীতিকদের চেয়ে ভালো কাজ করছেন। এই সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে এখন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও তোলপাড় চলছে