জাতীয় নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ ইসির
- আপডেট সময় : ১০:২৩:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০২২ ১১০ বার পড়া হয়েছে
৮ অক্টোবর ২০২২ইং,আজকের মেঘনা ডটকম, ডেস্ক রিপোর্ট।।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের (এমপি) কেউ প্রভাব বিস্তার করলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (৮ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক বৈঠকে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার ব্রি.জে. (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের পক্ষ বা বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের গুজব বা অপপ্রচার ছড়ায় এবং অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করে। আপনারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। কোনো গুজবের পরিস্থিতি তৈরি হলে আপনারা দ্রুত গুজবকারীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। আপনারা জেলা উপজেলা পর্যায়ে সার্বিকভাবে খোঁজ খবরের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে কোনো গুজব ছড়াচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করবেন।
‘এছাড়া নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নীতিমালা অনুসরণ করে খবর সংগ্রহের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা সারা দেশব্যাপী কর্মরত থাকেন। তারা নির্বাচনী এলাকার এবং বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহ করে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করেন। তাদের কাজে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত করবেন। নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে, সেটাই গণমাধ্যমকর্মীরা তুলে ধরবে। মনে রাখতে হবে গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের কাজে অযৌক্তিক বাধাপ্রাপ্ত হলে বিভিন্ন মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।’
এই কমিশনার আরও বলেন, নির্বাচনের সময় অনেক প্রভাবশালী মহল বা রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক/বর্তমান মন্ত্রী এমপিসহ নানা মানুষ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনের সময় অনেকে পেশিশক্তি, অর্থশক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা করে। কালো টাকার ব্যবহারের কথাও শোনা যায়। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মো. আহসান হাবিব খান বলেন, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া। যেকোনো মূল্যে আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। বিতর্কিত নির্বাচন করে সমালোচিত হতে চাই না। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদেরকে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, নির্বাচনকালে আপনারা আমাদের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেন। মনে রাখতে হবে আপনারা সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যাশা সবাই যেন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব শতভাগ নিরপেক্ষ হয়ে পালন করে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যদি পূর্ব থেকেই ফৌজদারি বা ক্রিমিনাল মামলা থাকে সেটি ভিন্ন ভাবে আদালতে স্বাভাবিক গতিতে চলবে। যদি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অযথা হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বচ্ছ মনোভাব দেখাতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী বা নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টাও বিবেচনায় রাখতে হবে।
আহসান হাবিব বলেন, কোনো প্রার্থীর বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টিতে আপনারা অবশ্যই গুরুত্ব দেবেন। এখানে কোনো প্রকার ছাড় না দিয়ে আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। আমরা চাই না নির্বাচনকে কেন্দ্র কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক। সেজন্য আপনারা পূর্ব প্রস্তুতি নেবেন।
অনুষ্ঠানে সব প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সব এসপি-ডিসিসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।