যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে মাদ্রাসা ভাঙচুর-লুটপাট
- আপডেট সময় : ১১:৩০:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১ ১৮৭ বার পড়া হয়েছে
০৫ জানুয়ারী ২০২১, আজকের মেঘনা. কম,
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করাকে কেন্দ্র করে মুহাম্মদ হাসান নামে স্থানীয় যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে মাদ্রাসায় ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাটসহ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উপর অতর্কিত হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনায় ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ বেশ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার মাইজভাণ্ডার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় গুলিবিদ্ধরা হলেন- ইমরান (২৭) পিতা-জানে আলম, ন‚র উদ্দিন (২৬) পিতা গাফফার, মুজিব উল্লাহ (১৮) পিতা-আজম, বাহাদুর (৬৫) পিতা-আবদুর রশিদ ও জোবায়ের (২৮) পিতা-আবদুল কাশেম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাইজভাণ্ডার মান্নানীয়া সড়কের পূর্ব পাশে নব প্রতিষ্ঠিত দারুস সালাম মাদ্রাসা নামে একটি কওমী মাদ্রাসায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর এবং ছাত্রদের মারধর করতে থাকে যুবলীগ নেতা হাসানের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় মাদ্রাসায় হামলার খবর পার্শ্ববর্তী মসজিদের মাইকে প্রচার করা হলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারীদের বাঁধা দিতে চাইলে এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েন যুবলীগ নেতা হাসান। এতে ৫ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। একপর্যায়ে এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে ধাওয়া করলে দ্রুত সটকে পড়ে হামলাকারীরা।
পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে পাঠান উপস্থিত লোকজন। অবস্থা আশংকাজনক হওয়া প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য আহতদের সবাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে ফটিকছড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফিন, ফটিকছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সময় হামলাকারীদের হাতে বন্দুকের পাশাপাশি দা-কিরিচসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ছিল বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
জানতে চাইলে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা মুহাম্মদ হাসান বলেন, সরকারী খাস জায়গা দখল করার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছে কতিপয় লোকজন। এ কারণে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে সরকারী জায়গায় মাদ্রাসা না করার জন্য বলেছি মাত্র। আমি কোন গুলি করি নাই। সব মিথ্যা রটানো হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়া মাত্র আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা হচ্ছে। হামলার ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।